লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুই হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

Looks like you've blocked notifications!
লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুই হত্যা মামলায় ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ছবি : এনটিভি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ও সদরে পৃথক দুই হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কমলনগরে মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের টি বয় মাকছুদুর রহমানকে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলার আসামি মাহমুদুল হাসান হিরু পলাতক রয়েছে। বাকি চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর মামলায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার দায়ে দেলোয়ার হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় দেলোয়ার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।’

কমলনগরে হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মোবারক হোসেন, মানিক হোসেন, মাহমুদুল হাসান হিরু, আরাফাত আরেফিন ও বাবুল হোসেন। পলাতক হিরু হাজিরহাট ইউনিয়নের চর জাঙ্গালিয়া গ্রামে মৃত মহসিন মাস্টারের ছেলে। অপর হত্যা মামলার আসামি দেলোয়ার সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের পুকুরদিয়া গুচ্ছগ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পলাতক আসামি হিরুর মা রেবেকা বেগমের সঙ্গে মাকছুদের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাকছুদ চরলরেঞ্চ বাজারের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের টি বয় ও চরলরেঞ্চ গ্রামের এনায়েত উল্যার ছেলে। মাকছুদ বাজারের নৈশপ্রহরীর কাজও করতেন। ঘটনাটি জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে হিরু অন্যান্য আসামিদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ২০১৬ সালের ৩০ মে রাতে মাকছুদের গলায় রশি বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে স্থানীয় একটি বাথরুমের ট্যাংকির ভেতর মরদেহ ফেলে দেয়।

পরে মাকছুদকে খুঁজে না পেয়ে তার ভাই বেলাল হোসেন কমলনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। কিছুদিন পর ৫ জুন সকালে খবর পেয়ে স্থানীয় তহশিলদারের বাড়ির বাথরুমের টাংকির কাছে থেকে মাকছুদের পোশাক উদ্ধার করেন বেলাল। পরদিন সকালে পুলিশ ওই টাংকি থেকে মাকছুদের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় বেলাল বাদী হয়ে অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কমলনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সায়েদুর রহমান ভূঁইয়া আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এদিকে মা রওশন আক্তারকে দেলোয়ারের ভরণ-পোষণ দেওয়া পছন্দ করতেন না স্ত্রী শামছুন নাহার। এ নিয়ে প্রায়ই তাঁদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি হতো। ২০১৫ সালের ১২ জুন স্থানীয় পুকুরদিয়া বাজারে দেলোয়ার মাকে দেখতে পান। পরে মাকে তিনি দুই কেজি আম কিনে দেন। খবর পেয়ে নাহার বাজারে এসে জনসম্মুখে দেলোয়ারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এতে দেলোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন রাতে ঘুমের মধ্যেই নাহারকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা সাজায়। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই কাউছার উদ্দিন চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পুষ্পবরণ চাকমা একই বছর ১৫ ডিসেম্বর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।