লিচুর জেলা দিনাজপুরে কেনাবেচা শুরু, বাস-ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি

করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে লিচুর জেলা দিনাজপুরে। করোনাভাইরাসের কারণে লিচুচাষিরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। সেই সাথে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা। এদিকে দুই মাসের বেশি সময় পর বাস-ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাজারও ভালো, ভালো দাম পাবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
তবে করোনার কারণে শেষ পর্যন্ত বাজার ভালো থাকে কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে তাদের মধ্যে। যদি আবারও লকডাউন ঘোষণা করে তাহলে ক্ষতির শিকার হবেন ব্যবসায়ীরা। এই মুহূর্তে লিচু কেনা-বেচা শুরু হয়েছে পুরো দমে। এক হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার ৬০০ টাকা হাজার দরে মাদ্রাজি, বোম্বাই ও কাঁঠালী লিচু বিক্রি হচ্ছে। বেদেনা চায়না ও চায়না থ্রি পাকতে আরো সময় লাগবে।
দিনাজপুর জেলা লিচুর জন্য বিখ্যাত। জেলার লিচু ঢাকাসহ সারা দেশে সরবরাহ হয়ে থাকে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে দিনাজপুরের বেদানা চায়না, চায়না থ্রি, বোম্বাই, মাদ্রাজি ও কাঁঠালী লিচুর কদর রয়েছে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার জেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনাজপুর সদর, হাকিমপুর, বিরল, কাহারোল, খানসামা, বীরগঞ্জসহ ১৩ উপজেলায় লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। তবে হাকিমপুর, বিরল ও সদরের কয়েকটি এলাকায় বেদেনা লিচুর জন্য বিখ্যাত।
গত বছর রমজান মাসে লিচুর ফলন হওয়ায় লিচুচাষি ও ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখেননি। ক্ষতি হয়েছে তাঁদের। এবার লিচু গাছে ব্যাপকভাবে লিচুর ফলন হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে লিচু কেনাবেচা কেমন হবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। ট্রেন ও বাস চলাচল শুরু করায় স্বস্তি ফিরে এসেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। দামও ভালো পাচ্ছেন তাঁরা। ঢাকাসহ সারা দেশের পাইকাররা এবার লিচু কিনতে দিনাজপুরে আসতে শুরু করেছেন। তবে করোনা আতঙ্ক রয়েছে পাইকারদের মধ্যে।
সেইসঙ্গে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে করোনার থাবা বসিয়েছে লিচুর জেলা দিনাজপুরে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার জেলায় ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে। রোজার শেষে লিচু ভাঙ্গার কারণে চাষিরা লিচুর দাম পাবে বলে আশা করছে কৃষি অফিস।
দিনাজপুর হর্টিকালচারের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। প্রতি বছরই লিচুর বাগানের সম্প্রসারণ হচ্ছে। করোনার পরও লিচু ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। দিনাজপুরে ৩০ থেকে ৩২ হাজার মেট্রিক টন লিচুর ফলন হয়ে থাকে, যার বাজারমূল্য ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা।