শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার সত্যতা মেলেনি
মুন্সীগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার কোনো সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি। আজ বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির একমাত্র সদস্য সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই তালুকদার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার (মাউশি) মহাপরিচালক নেহাল আহমেদের কাছে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই তালুকদার বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের কথা মৌখিকভাবে শুনে তা লিখিত আকারে তদন্ত প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কর্মচারী, শিক্ষক, অভিভাবকদের বক্তব্য স্বাক্ষরসহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ৬০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্তে শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।’
গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্রের ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। ওই দিন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে শিক্ষার্থীরা কথাবার্তা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে। পরে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছাড়িয়ে দেয়। ২২ মার্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা জোটবদ্ধ হয়ে শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি মো. আসাদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। পরের দিন ২৩ মার্চ পুলিশ ওই শিক্ষককে আদালতে তোলা হলে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১০ এপ্রিল শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোতাহারাত আখতার ভূঁইয়া তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল কারাগার থেকে মুক্ত হন। এ ছাড়া দীর্ঘ ২৮ দিন পর গেল মঙ্গলবার সকালে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল স্কুলে ফেরেন। এদিন তিনি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করেন।