শ্রীলঙ্কার নেতারা বিএনপির দেখানো পথেই দেশ ত্যাগ করছেন : তথ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
আজ শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি : এনটিভি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শ্রীলঙ্কার নেতারা এখন অতীতে বিএনপির দেখানো পথ ধরেই দেশ ত্যাগ করছেন। 

তথ্যমন্ত্রী আজ শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্র বলেন, ‘যাঁরা শ্রীলঙ্কার তুলনা বাংলাদেশে দেয়, তাঁরা অনেক আগেই শ্রীলঙ্কার মতো পালিয়েছেন। কেননা আজকের শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে তাঁরাও পড়েছিলেন, তাই তাঁরা এসব কথা বলছেন।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “শ্রীলঙ্কার নেতারা এখন যেভাবে পালাচ্ছেন, বিএনপির নেতারাও সেভাবে আগেই পালিয়ে গেছেন। তারেক রহমান ‘আমি আর রাজনীতি করবো না’ মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। ঢাকায় তাঁদের নেতা মাহবুবুর রহমানকে তাঁদের দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ ধাওয়া করেছিল, জুতা নিক্ষেপ করেছিল। ৮০ সালে জিয়াউর রহমান যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যান, তখন তাকেও ধাওয়া করা হয়েছিল। এখন আপনারা নিজেরা কীভাবে পালাবেন সেই পথ খুঁজুন।”

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের পরিচালনায়  তৃণমূলের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য  ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সরকার যখন পদ্মা সেতু করছিল, তখন বিএনপি দেশে গুজব ছড়িয়েছিল যে, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে মানুষের মাথা লাগবে। আবার সরকার যখন ভারত থেকে করোনা টিকা নিয়ে এসে দেশের মানুষকে দেওয়া শুরু করল, তখন বিএনপি গুজব ছড়াল যে, ওই টিকা কাজ করে না। রিজভী সাহেব বক্তব্য দিলেন, আমাদের করোনা টিকা অকেজো। পরে তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে টিকা ঠিকই নিয়েছিলেন। আমাদের চট্টগ্রামের ডা. জাফরুল্লাহও কথা বলেছিলেন টিকা নিয়ে। পরে তিনিও লজ্জা ভেঙে টিকা নেন এবং বলেন—আমার আরাম লাগছে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তৃণমূল হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রাণ। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতারাই এ দলকে টিকিয়ে রেখেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা সমস্যা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অনেক নেতা দ্বিধান্বিত ও বিচলিত হয়েছেন, অনেক নেতা দল ত্যাগ করেছেন, মূল নেতৃত্বের সাথে বেঈমানি করেছেন। কিন্তু, তৃণমূল কখনো আওয়ামী লীগের সাথে বেঈমানি করেনি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আজকে প্রায় সাড়ে ১৩ বছর ক্ষমতায়, এতদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের অনেকের মধ্যে আলস্য এসেছে। দলের মধ্যে সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আজকে আমাদেরকে ভাবতে হবে, আমরা কীভাবে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব। আমি দেখতে পাই নেতা আসলে বিপুল স্লোগান হয়, সেলফি তোলার জন্য প্রতিযোগিতা হয়, কিন্তু সেই ছবি তুলে শুধু ফেসবুকে দেওয়া ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কাজ করতে আমি দেখি না।’ নিজেকে আওয়ামী লীগের মাইকিং করা কর্মী উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রায় ৭ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিরূপ সমালোচনা হয়, তখন তাঁর প্রতিবাদে আমাদের নেতাকর্মীদের যেভাবে সরব হওয়া দরকার, সেটি হতে দেখি না।’

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের ধর্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সংসদের চিপ হুইপ আবু সাঈদ মাহমুদ স্বপন ও সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও ওয়াসিকা আয়েশা খান প্রমুখ।