ষড়যন্ত্রকারীদের চিনে রাখতে হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে আজ সোমবার জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি : এনটিভি

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘প্রতি বছর ১৫ আগস্ট এলে প্রথমেই জাতির ষড়যন্ত্রকারীদের কথা আগে মনে পড়ে। এই ষড়যন্ত্রকারীরা জাতির পিতার সাথেই মিশে থেকে ১৯৭৫ সালের এই দিনে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করেছে। সেই ষড়যন্ত্রকারীরা ও তাদের বংশধরেরা এখনও প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র চালিয়েই যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীরা বর্ণচোরা, তারা আমাদের সাথেই মিশে থাকে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য হলেও তাদেরকে আমাদের চিনে রাখতে হবে।’

আজ সোমবার জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতাল অডিটোরিয়ামে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ষড়যন্ত্রকারীদের প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ষড়যন্ত্র করেই বাঙালি জাতিকে দীর্ঘদিন নির্যাতন করেছে পাকিস্তানিরা। ষড়যন্ত্র করেই তারা বঙ্গবন্ধুকে দীর্ঘদিন সময়ে সময়ে জেলে রেখেছে এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই জাতির জনককে হত্যা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রকারী কারা হয়? যারা খুব বেশি কাছাকাছি থাকে। সবসময় সে পর্যবেক্ষণ করে। তাদের পেছনেও অনেক লোক থাকে। যারা বঙ্গবন্ধুর কাছে ছিল, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তাদের অনেকে মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু তারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করেনি। ষড়যন্ত্রকারীরা আশেপাশেই ঘুরে বর্ণচোরার মতো।

সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানিসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জ্বালানির তেল, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়। করোনা পরবর্তী দুঃসময় ও যুদ্ধ নিগ্রহের কারণে বিশ্বময় অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতই সাময়িকভাবে অসুবিধা বাংলাদেশেও হচ্ছে। ঝড়, বন্যা এলে সেটি কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বাছবিচার করে আসে না। একইভাবে বিশ্বময় অস্থিরতার কিছুটা চাপ বাংলাদেশে চলে এলেও বাংলাদেশ জানে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। বাংলাদেশ অতি দ্রুতই এই সাময়িক অসুবিধা থেকে বেড়িয়ে সুদিনে ফিরে আসবে। এজন্য আমাদের সবাইকে কিছুটা ধৈর্য ধারণ করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

১৫ আগস্টের দিনে দেশের কিছু মানুষের শোক প্রকাশ না করা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও দেশের বিরাট একটা অংশ বঙ্গবন্ধুকে মানে না। জাতির পিতাকে তারা ধারণ করে না। এমনকি তারা জয় বাংলাও বলে না। স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়তো সবাই করে না, কিন্তু পরে স্বাধীনতার স্থপতির বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকে। ভারতের স্বাধীনতার স্থপতি মহত্মা গান্ধীর বেলায় কিন্তু তাদের জাতি ঐক্যবদ্ধ, তারা সবসময় ঐকমত্য আছে, কিন্তু আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধুর বেলায় কোনো ঐকমত্য নেই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাস্থ্যখাতে অনেক কিছু করে গেছেন। বিএমডিসি, নিপসম, বিএমআরসিসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান করেছেন। আর এখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যখাত এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা তিনি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন আমরা সবকিছুই করতে পারি। যেমনটা করোনা মোকাবিলা করেছি, টিকায় সফলতা অর্জন করেছি।

তিনি আরও বলেন, দেশ গঠনে আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। একজন নার্স রোগীকে ভালো সেবা দেবে, এটাই দায়িত্ব। একজন চিকিৎসক রোগীকে দেখে ভালো চিকিৎসা দিল, সুস্থ করে তুলল এটাই তার দায়িত্ব। প্রত্যেককেই এটা করতে হবে, তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলানসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।