সজনের বাম্পার ফলনে খুশি দিনাজপুরের চাষিরা

Looks like you've blocked notifications!
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় চলতি মৌসুমে সজনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ছবি : এনটিভি

বাড়ির উঠানে পাতাশূন্য গাছ, ছোট-ছোট ডাল। তাও প্রায় ঢেকে গেছে সজনে ডাটায়। থরে থরে সাজানো এ ডাটা প্রকৃতিতেও যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ আঁশ জাতীয় সবজির ভারে হেলে পড়েছে ডালপালা। এ দৃশ্য দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার।

চাষিরা বলছেন, চলতি মৌসুমে সজনের বাম্পার ফলন হয়েছে। গ্রামের বাজারেও কেজিপ্রতি সজনের ভালো দাম রয়েছে। ফলে, খুশি সজনেচাষিরা। এখানকার সজনে চাষ নতুন নয়। ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে সজনে চাষ। সজনে চাষে সচ্ছলতারও দেখা মিলছে অনেক পরিবারের।

প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজনে চাষ করে পুষ্টির পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন বেশি বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যে কম-বেশি প্রায় সব বাড়িতে তিন-চারটি করে সজনে গাছ রয়েছে। এ ছাড়া চাষ করার জমির ধারে এবং রাস্তার পাশেও সজনে গাছ লাগানো হয়েছে। এ বছর সজনের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা অনেকটা পেরিয়ে যাবে বলে ধারণা কৃষি কর্মকর্তার। এ উপজেলায় সজনের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের সজনে চাষি আমিনুল ইসলাম ও মহসিন আলী। তাঁরা দুজনই বাম্পার ফলনে খুশি। তাঁদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়ির সামনের ফাঁকা স্থানে আটটি সজনের গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওই গাছে মোটামুটি অনেক টাকার সজনে বিক্রি করেছি। আশা করছি, এবার আরও বেশি টাকার সজনে বিক্রি করতে পারব।’

মহসিন আলী বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি সজনের দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উচ্চমূল্য পাওয়ায় আমরা খুশি।’ মহসিন ও আমিনুলের দাবি, দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে সজনে চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এ এলাকার অন্যান্য চাষিরা। সজনের মৌসুম শেষে প্রতিবারের মতো এবারও ডাল রোপণ করা হবে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা জানান, সজনে একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আঁশ জাতীয় সবজি। সজনেকে বলা হয় ‘মিরাকল ট্রি’। এর পাতা, ফুল ও ফল সবই খাওয়া যায়। সজনেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

জোহরা সুলতানা বলেন, ‘বাড়ির পাশের অনাবাদি ও পতিত জমিতেও সজনে চাষ করা যায়। এ ছাড়া ঠান্ডা-গরম ও খরা সহিষ্ণু বলে এ গাছ বাংলাদেশের সবস্থানে জন্ম নেয়। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি বছরে সজনের ভালো ফলন হয়েছে। এ ছাড়া সজনে গাছের তেমন কোনো রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। অন্যান্য খরচও নেই। সামনের সময়েও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও বাম্পার ফলন আশা করছি।’