সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব, শিকলে বাঁধা ভাই!
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ চাওয়ায় ভাইদের বিরুদ্ধে প্রবাসফেরত তাহের মিয়াকে (৪২) পায়ে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাহের মিয়া উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের নলবাইদ মধ্যপাড়া ছমির উদ্দিন বেপারীর বাড়ির মৃত হাজী রুসমত আলীর ছেলে।
আজ বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিকলবন্দি তাহের মিয়াকে উদ্ধার করে।
তাহের মিয়ার ভাষ্য মতে, মালয়েশিয়া থেকে দশ মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন তিনি। তিনি সেখানকার এক নারীকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সেখানে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন দেশে থাকার পর তার সঙ্গে থাকা অর্থ শেষ হয়ে যায়। মালয়েশিয়া ফিরে যেতে তার টাকার প্রয়োজন। সেজন্য তার বড় ভাই বাচ্চু মিয়া ও ছোট ভাই জামানের কাছে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ চান বিক্রি করার জন্য। কিন্তু তারা সম্পত্তির ভাগ না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে তাকে হয়রানি করছিলেন। আজ বুধবার সকালে এই নিয়ে ভাইদের সঙ্গে বিবাদের একপর্যায়ে তারা তাকে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে তাহের মিয়ার ছোট ভাই জামান মিয়া বলেন, ‘ভাই তাহের মিয়াকে আগেই পৈতৃক সম্পত্তির অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো তিনি এরই মধ্যে বিক্রি করে দিয়ে আবারও ভাগ চেয়ে ঝগড়া-ফ্যাসাদ করছেন। তাই তাকে বেঁধে রাখা হয়।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘বাবার সম্পত্তির ভাগ নিয়ে ভাইদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। প্রবাসফেরত তাহের মিয়া তার ভাগের সম্পত্তি আগেও বিক্রি করে গেছেন বলে ভাইদের দাবি। এখন আবার সম্পত্তির দাবি করায় তার ভাইয়েরা তাকে পায়ে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। কেউ জানতে চাইলে তারা বলে, তার ভাই নাকি মানসিক রোগী।’
তাহের মিয়া যদি তার ভাগের সম্পত্তির সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারেন, তাহলে তার ভাগের সঠিক প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান ইউপি সদস্য মো. শাহ আলম মিয়া।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘প্রবাসফেরত ভাইকে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তাহের মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’