সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে : এলজিআরডি মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন মজিদ রাখাসহ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
একইসঙ্গে ইসলামকে ব্যবহার করে যারা দেশে উগ্রবাদ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে তাদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে সব ধর্মের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
আজ শুক্রবার নীলফামারী এবং পঞ্চগড় জেলা সফরে এসে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন এলজিআরডি মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, যারা ধর্মের নামে হানাহানি লাগাতে চায়, দেশের উন্নয়ন চায় না তারাই এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মো. তাজুল ইসলাম জানান, ‘সব ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অন্য ধর্মের প্রতি কোনো হিংসা-বিদ্বেষসুলভ আচরণ করা যাবে না। ইসলামকে যারা ব্যবহার করতে চায়, তাদের রুখে দিতে হবে। এসব ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা সব নাগরিকের দায়িত্ব উল্লেখ করে ষড়যন্ত্রকারীদের উস্কানিতে বিভ্রান্ত না হয় দেশের সব মানুষকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
সাম্প্রদায়িকতার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশগুলোর মানুষ সুখে ছিল কিন্তু আজ মানুষের চিৎকার আর আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। আমাদের দেশে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি চেষ্টা চলছে।’
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব জনপ্রতিনিধিরা স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। সব ধর্মের প্রতি সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশেকে এক সময় ভিক্ষুকের জাতি বলা হতো। কিন্তু আজকে সারা বিশ্বে দেশটি উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নকশা তৈরি করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে পুরো জাতি আজ ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য সব ধর্মের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এ ধারা কেউ বন্ধ রাখতে পারবে না। দেশের উন্নয়নে কারো সঙ্গে কোনো আপোস হবে না। বিএনপির মুখরোচক কথা শুনে দেশের মানুষ আর প্রতারিত হতে চায় না বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
সৈয়দপুরের জমি নিয়ে রেল-পৌরসভা দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম কোথাও কোনো জটিলতা থাকলে তা নিরসন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
সব পৌরসভাগুলোকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান জানান এলজিআরডি মন্ত্রী।
সফরকালে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, ডিপিএইচইর প্রধান প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় নেতারা এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সৈয়দপুর পৌরসভার ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট, পঞ্চগড় পৌরসভায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মিত আয়রন রিমোভাল প্লান্টের ও পানি পরীক্ষাগার, তেঁতুলিয়া উপজেলায় এলজিইডির পুনর্বাসনকৃত ভজনপুর-শালবাহান সড়কের উদ্বোধন, পঞ্চগড় ময়দান দিঘীতে সিটমহল প্রকল্পের আওতায় এলজিইডির নির্মিত রাস্তা, মসজিদ ও মন্দির পরিদর্শনের পাশাপাশি চলমান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পরিদর্শনও করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।