সরকারি ঘর পেলেন রাস্তার ধারের সেই বিধবা সখিনা

Looks like you've blocked notifications!
রংপুরের মিঠাপুকুরে রাস্তার ধারে দেড় যুগ ধরে বসবাস করা সেই সখিনা বেওয়ার হাতে জমির দলিল, ঘরের চাবি তুলে দিয়ে ফিতা কাটছেন জেলা প্রশাসক আসিফ আহসান ও ইউএনও ফাতেমাতুজ জোহরা। ছবি : এনটিভি

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের কয়েরমারী গ্রামে রাস্তার ধারে দেড় যুগ ধরে বসবাস করা সেই সখিনা বেওয়া (৯০) ও তাঁর নাতি প্রতিবন্ধী চেংটু মিয়া সরকারি ঘর পেয়েছেন। এনটিভি অনলাইনে খবর প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি।

আজ সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক আসিফ আহসান কয়েরমারী গ্রামে জমকালো আয়োজন করে সখিনা বেওয়ার হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন।

এ সময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমাতুজ জোহরা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন, উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান। 

কয়েরমারী গ্রামের বাসিন্দা  স্বাধীন আহম্মেদ বলেন, প্রায় দেড় যুগ ধরে রাস্তার ধারে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছিলেন সখিনা বেওয়া ও তার নাতি প্রতিবন্ধী চেংটু মিয়া। এ নিয়ে গত ১ আগস্ট এনটিভি অনলাইনে একটি খবর প্রকাশিত হয়। তার পরই মিঠাপুকুরের ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তারা এ গ্রামের বেদখল হয়ে যাওয়া এক খণ্ড সরকারি জমি উদ্ধার করে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। প্রায় তিন মাসের মধ্যে নির্মাণ করা হয় ঘরটি। আজ সেই ঘরটি সখিনা বেওয়া ও তার প্রতিবন্ধী নাতি চেংটু মিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা ইউসুফ আলী বলেন, সখিনা বেওয়ার দিকে সরকারের লোকজন নজর দিয়েছেন। তাকে একটি ঘর ও জমি দিয়েছেন। গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

সখিনা বেওয়ার প্রতিবন্ধী নাতি চেংটু মিয়া বলেন, ‘মুই খুব খুশি। বাড়ি দিল, জমি দিল। আর চাওয়ার কিছু নাই। হামাক আর কষ্ট করা নাগবার নায়।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ও ইউএনও স্যারের নির্দেশনায় আমি সখিনা বেওয়ার বাড়িতে বেশ কয়েকবার গিয়েছি। ওই গ্রামে বেদখলে থাকা সরকারি জমি উদ্ধার করে স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। ডিসি স্যার এসে ঘরটি উদ্বোধন করলেন। আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।’

মিঠাপুকুরের ইউএনও ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, এনটিভি অনলাইনের সংবাদ প্রকাশের পর আমরা জানতে পারি সখিনা বেওয়া ও চেংটু মিয়া নামে দাদি-নাতি রাস্তার ধারে বসবাস করছেন। ডিসি স্যারের নির্দেশে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করি। ওই গ্রামেই বেদখলে থাকা একটি সরকারি জমি উদ্ধার করে সেখানে ঘর নির্মাণ করার কাজ শুরু করা হয়। বিশেষভাবে নরজদারির মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ঘরটি নির্মাণ করতে সক্ষম হই।

জেলা প্রশাসক আসিফ আহসান বলেন, দেশে দরিদ্র ও প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্প করেছেন। লাখ লাখ ভূমিহীন মানুষকে জমি ও ঘর দিয়েছেন। আমরা গণমাধ্যমে থেকে সখিনা বেওয়ার খোঁজ পাই। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘর নির্মাণ করে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো।