সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপিনেতা চৌধুরী আলমের পরিবারের খোঁজখবর নিতে গিয়ে শুক্রবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য দেন। ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এ সরকারের নির্যাতনকারী বাহিনী ফার্মগেট ইন্দিরা রোড থেকে বিএনপিনেতা চৌধুরী আলমকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে ১২ বছর অতিবাহিত হলেও পরিবার এবং আমরা দলের লোকেরা কোথাও তাঁর সন্ধান পাইনি। এখন পর্যন্ত সরকার চৌধুরী আলমের কোন খোঁজ দিতে পারেনি।’

গুম হওয়া বিএনপিনেতা চৌধুরী আলমের পরিবারের খোঁজখবর নিতে গিয়ে আজ শুক্রবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ধরনের গুমের অনেক ঘটনা ঘটেছে। শুধু আমাদের দলেই ছয় শতাধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে আছে। আজ পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান সরকার দিতে পারেনি, যা তাদের দায়িত্ব।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার আইনে পরিষ্কার বলা আছে—কাউকে যদি গুম করা হয়, তাহলে সেটি মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ। গুমের এ ঘটনাগুলোতেই প্রমাণিত যে, এ সরকার একেবারেই কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী সরকার। তাদের ১৫ বছরে দুঃশাসনে বাংলাদেশের কত মানুষ সন্তানহারা হয়েছে, কত জন স্বামীহারা, কত জন পুত্রহারা তার সঠিক হিসাব দিতে পারব না।’

‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতে গুম-খুন, বেআইনিভাবে আটক, বিচারবহির্ভূত হত্যা এমনভাবে বেড়েছে, যেটি কোনো সভ্য সমাজ-দেশে হতে পারে না।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে যাদের গুম করা হয়েছে, তাদের জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদের পরিবারকে ব্যাংক ও সম্পত্তির মালিকানা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ফলে কোনোরকম খেয়ে-পরে জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের পরিবারগুলোকে।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘শুধু গুম নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যে কারণে এ সরকারকে একমাত্র জনগণের শত্রু হিসেবে আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। গুম-খুন-হত্যা-নির্যাতন ও ভোটের অধিকার হরণ করার দায়ে এ সরকারের পদত্যাগ দাবি করে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এরা অনর্গল মিথ্যা কথা বলে। এদের মতো মিথ্যা কেউ বলতে পারে না। আর, মুচলেকা দিয়ে ১/১১ সরকারের সময় কে আমেরিকায় গিয়েছিল, সেটি আমরা জানি, নামটি বলতে চাই না।’

সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষ অনেক কষ্টে আছে। সেনাবাহিনী নামানোর পর, তারা কিছু ত্রাণ পৌঁছে দিতে কাজ করছে, কাজ করছে এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সবচেয়ে বেশি কাজ করছে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা। তারা নৌকা ভাড়া করে ত্রাণ নিয়ে দুর্গত মানুষের দরজায় পৌঁছে দিচ্ছে। অথচ সম্প্রতি অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে সার্কিট হাউসে নামমাত্র দশ জনকে টোকেন দিয়ে বলে দিলেন, কোনো সমস্যা নেই, সব সমাধান হয়ে যাবে। আমি অবিলম্বে  বন্যাকবলিত অঞ্চলকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি করছি। একই সঙ্গে বলছি—যে কারণে বন্যা, তার কারণ খুঁজে বের না করে, আরও বন্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করছে সরকার। সবাই অবগত রয়েছেন—রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের প্রাইজ প্রজেক্ট ইটনা-মিঠামইন হাওরের মাঝখান দিয়ে যে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, সেটি পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে।’