সরকার সহযোগিতা করায় বিএনপি নির্বিঘ্নে সমাবেশ করছে: তথ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। ছবি : এনটিভি

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি যেন সমাবেশ করতে পারে, সে জন্য সরকার সর্বাত্মকভাবে তাদেরকে সহায়তা করে এসেছে। সে জন্যই তারা নির্বিঘ্নে সমাবেশগুলো করতে পেরেছে। খালি কলসি বাজে বেশির মতোই বিএনপি নেতারা ঢাকায় তাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে বাগাড়ম্বর করছেন।

আজ বুধবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা তো সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন ১২-১৩ বছর ধরে। ওনারা এক দফা আন্দোলনেই তো আছেন। আর ১০ ডিসেম্বর কতটুকু কি হবে সেটা আমরা জানি ও বুঝি। কারণ সারা দেশে তো ওনারা সমাবেশ করেছেন। সমাবেশের নামে কোনো কোনো জায়গায় পিকনিক করেছেন, বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি করেছেন। বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের যে হাঁকডাক তারা দিয়েছিলেন, তার কোনো প্রতিফলন সমাবেশগুলোতে ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের কোনো সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনে যতো মানুষ হয়েছে, তাদের মহাসমাবেশগুলোতে সে রকম হয়নি।’

কুমিরের একই ছানা বারবার দেখানোর মতো, বিএনপির সমাবেশগুলোতে একই লোক সারা দেশে ঘুরছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে লঞ্চে করে বরিশালে মানুষ গেছে সমাবেশ করার জন্য। সিলেটের সমাবেশে কুমিল্লা থেকে গেছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ থেকেও গেছে। ঢাকাতেও কি হবে আমরা জানি ও বুঝি। তবে তারা যেন সমাবেশ করতে পারে সে জন্য সরকার সর্বাত্মকভাবে তাদেরকে সহায়তা করে এসেছে। সে জন্যই তারা নির্বিঘ্নে সমাবেশগুলো করতে পেরেছে।’

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা আমাদের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে, বোমা হামলা চালিয়েছে, বহু মানুষকে হতাহত করেছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমি নিজেও আহত হয়েছি। তাদের সমাবেশে কিন্তু একটি পটকাও ফোটেনি আজ পর্যন্ত। সরকার নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে বিধায় তাদের এভাবে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করা সম্ভবপর হয়েছে।

‘বিএনপি কেন নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায়’প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘উনারা না কি বিশাল সমাবেশ করবেন- কেউ বলছে ১০ লাখ, আবার কালকে টেলিভিশনে দেখলাম ২৫ লাখ। কিন্তু নয়াপল্টনের সামনে ১ কিলোমিটার রাস্তা যদি বন্ধ করা যায় তাহলে ৫০ হাজার মানুষ ধরে। নয়াপল্টনে করার উদ্দেশ্যের মধ্যে বোঝা যায় যে, সমাবেশ আগে থেকেই ফ্লপ।’

কেন একটি প্রধান রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করতে হবে- প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কি কোনো প্রধান রাস্তা বন্ধ করে কোনো সমাবেশ করি! তারা অন্যান্য জায়গায় যে সমাবেশগুলো করেছে সেগুলো তো মাঠেই হয়েছে। তারা যেভাবে সমাবেশ করবে বলছে, সে রকম মাঠ তো ঢাকা শহরে নেই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও তা নয়। আসলেই পূর্বাচল ছাড়া আমি কোনো জায়গাই দেখি না। কারণ ১০-২০ লাখ লোকের জন্য পূর্বাচল ছাড়া আর কোনো জায়গা নেই।

তিনি বলেন, ‘তারা কেন নয়াপল্টনের সামনে করতে চায়, সেটি সহজেই অনুমেয়। হেফাজতে ইসলাম যে ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল, তারা সে ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরির জন্য গাড়িঘোড়া ভাঙচুর, অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষের সম্পত্তির ওপর হামলা পরিচালনা করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ, ঢাকা শহরের মানুষ সেটি হতে দেবে না।’

‘১০ ডিসেম্বর আমাদের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সতর্ক পাহারায় থাকবে’জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভিত জনগণের অনেক গভীরে প্রোথিত, আমরা জনগণের সাথে আছি। সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করার জন্য সবসময় সতর্ক আছি। বিএনপি সারা দেশে সমাবেশের নামে যে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে, তার সাথে জঙ্গিগোষ্ঠীর সাম্প্রতিক অপতৎপরতা একসূত্রে গাঁথা। টার্গেটেড কিলিং-সন্ত্রাসসহ তাদের নানা পরিকল্পনা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৩-১৪-১৫ সালে যখন তারা মানুষ শুধু নয়, পশুপাখি-গরু-মুরগির ওপরও হামলা পরিচালনা করেছিল, রাস্তার গাছপালা উপড়ে ফেলেছিল, তখন তাদের মোকাবিলা করেছি। সুতরাং তাদেরকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় আমরা জানি। তবে দেশের মানুষ সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেবে না, আমরা করতে দিতে পারি না। আওয়ামী লীগ যা কিছু করবে; সেটি দেশের শান্তি, স্থিতি, শৃঙ্খলা রাখার স্বার্থে করবে।’

১০ ডিসেম্বর পরিবহণ ধর্মঘট থাকবে কী না এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেখুন বাস-ট্রাক মালিক সমিতি এগুলো বেসরকারি সংগঠন, এখানে সব দলের নেতারা আছে। সব দল মিলেই বাস-ট্রাক মালিক সমিতি এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোতেও সব দল আছে। এটি তাদের ব্যাপার, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো জানাশোনা নেই, আমাদের কোনো হাতও নেই।’