সাধুসঙ্গের খোঁজে কুষ্টিয়ায় লালনভক্তরা

Looks like you've blocked notifications!
লালন স্মরণোৎসবের উদ্‌বোধনী রাতে গতকাল মঙ্গলবার কুষ্টিয়ায় লালনের আখড়ায় গান পরিবেশন করছেন লালন শিল্পীরা। ছবি : এনটিভি

লোকে লোকারণ্য, সরগরম চারদিক। বাড়ছে ভিড়, তিল ঠাঁই নেই যেন!

দুই বছর পর হচ্ছে লালন স্মরোণৎসব। তাই, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কুষ্টিয়ার লালনের আখড়ায় ছুটে এসেছেন লালনভক্ত, সাধু ও অনুসারীরা। তাঁদের পদচারণায় গতকাল মঙ্গলবার রাত অবধি আখড়া হয়ে ওঠে জমজমাট। বর্ণিল সাজে সাজানো লালনের মাজার ঘিরে দেখা যায় ভক্তদের আনাগোনা। মঞ্চে চলে লালনগীতির পরিবেশনা।

কালী নদীর পাশে লালন স্মরণোৎসব ঘিরে প্রতি বছরই সব শ্রেণির, নানা পেশার, সব ধর্মের মানুষের আনাগোনা হয়। যদিও করোনার বিস্তার রোধে দুই বছর বন্ধ ছিল এ উৎসব। এবার সে উৎসবের শুরুর দিন থেকে ব্যতিক্রম ঘটেনি লালনভক্তদের আনাগোনায়।

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’—লালন ফকিরের অমর বাণীকে ধারণ করে তাঁরা ছুটে এসেছেন স্মরণোৎসব ও মেলায়। সেখানে গতকাল রাত ৮টায় আনুষ্ঠানিক উদ্‌বোধনের পর থেকে শুরু হয়েছে লালনের কর্মময় জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আখড়া ও আখড়ার বাইরে লালনভক্তরা গাইছেন সাঁইজির গান।

বাউল সম্রাট লালন শাহ তাঁর জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এ আখড়াবাড়িতে চৈত্রের দৌলপূর্ণিমার রাতে বাউলদের নিয়ে সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তাঁর মৃত্যুর পরও এ উৎসব চলে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে। ১৭ মার্চ রাত পর্যন্ত এ উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে সিসি টিভি, ওয়াচ টাওয়ারসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা।

আয়োজিত এ লালন স্মরণোৎসবের উদ্‌বোধন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন (এনডিসি)। এ উপলক্ষ্যে লালন একাডেমির মূল মঞ্চে আলোচনা সভা বক্তব্য দেন লালন একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, আলোচনা করেন পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলমসহ অনেকে।

এ উৎসবের প্রথম রাতে প্রধান আলোচক কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমানের আলোচনা শেষে মূল মঞ্চে গান পরিবেশন করেন বরেণ্য লালন শিল্পী ফরিদা পারভীন ও অন্যান্যরা।