সিলেটে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ : দুই মামলা চলবে ট্রাইব্যুনালে

Looks like you've blocked notifications!
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ছয়জন। ছবি : সংগৃহীত

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির দুটি পৃথক মামলা একই আদালতে বিচারকার্য চলবে বলে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আলোচিত ঘটনা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সম্প্রতি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।

এর আগে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির দুটি পৃথক মামলা একই আদালতে একসঙ্গে বিচার করা নিয়ে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। পরে হাইকোর্ট শুনানি শেষে একই আদালতে মামলা পরিচালনার নির্দেশনা দেন।

এদিকে আজ রোববার আলোচিত মামলাটি সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে ছিল। আদালত স্থানান্তরের নির্দেশনা হওয়ায় মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখা হয়।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) রাশেদা সাঈদা খানম সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুটি মামলা একসঙ্গে বিচারকার্য নিয়ে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম মুলতবি রাখা হয়েছিল। এ অবস্থায় আদালত স্থানান্তরের নির্দেশনার বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। নির্দেশনার গেজেট হাতে এলে মামলার সব নথিপত্র দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে এবং সেখানেই বিচারপ্রক্রিয়ার পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান শহীদুজ্জামান বলেন, ‘মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হলে আমরা উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী একসঙ্গে দুটি মামলার বিচারকার্য করার বিষয়টিও নজরে দেব। দুটি মামলায় একই সাক্ষী, তাই একসঙ্গে বিচারপ্রক্রিয়া চললে সাক্ষীদের বিড়ম্বনা ঘুচবে এবং বিচার প্রক্রিয়াও দ্রুত হবে।’

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা হয়। তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছাত্রলীগের ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‍্যাব। গ্রেপ্তারের পর আটজন আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির ঘটনার দুটি ভাগে তদন্ত করে পুলিশ দুটি মামলায় রূপান্তর করে।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করায় অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে। তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।