সিসিক মেয়রের ওপর হামলা : পরিবহণ শ্রমিকদের আসামি করে মামলা

Looks like you've blocked notifications!
গতকাল বুধবার সিসিক মেয়র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার অভিযোগে বন্দুকসহ আটক পরিবহণ শ্রমিক ফয়সল আহমদ ফাহাদ (৩৮)। ছবি : এনটিভি

সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় পরিবহণ শ্রমিকদের আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলা করা হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পক্ষ থেকে আর বাকি দুটি মামলার বাদী পুলিশ।

তিনটি মামলায় ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও আড়াইশ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (ডিসি) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের। 

পুলিশ আরও জানায়, গতকাল বুধবার রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা তিনটি করা হয়। এর মধ্যে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে পরিবহণ শ্রমিক ফয়সল আহমদ ফাহাদকে (৩৮) আসামি করে মামলা করেন। এরই মধ্যে তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় উপসহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত দাস বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় ১০ জন পরিবহণ শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপরদিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী হয়েছেন এসআই (নিরস্ত্র) আবদুল মান্নান। এই মামলায় ১৭ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০০ জনকে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে পরিবহণ শ্রমিকদের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়ির স্ট্যান্ড উচ্ছেদের বিষয় নিয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (১৪১৮) কার্যালয়ে সভা করেন পরিবহণ শ্রমিক নেতারা।

বৈঠক শেষে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি ময়নুল ইসলাম গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি  (সোমবার) থেকে  সিলেটে পরিবহণ ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

গতকাল দুপুরে সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে  কাউন্সিলর-পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।

গতকাল সকালে চৌহাট্টা এলাকায় সড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে পরিবহণ শ্রমিকরা। এ খবর পেয়ে দুপুরে কাউন্সিলর, ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে যান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি দেখতে পান পরিবহণ শ্রমিকরা তখনও সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রেখেছে। এ সময় মেয়রসহ সিসিকের কর্মকর্তারা সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু করতে চাইলে তাঁরা বাধা দেন। এ নিয়ে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায় পরিবহণ শ্রমিকরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরিবহণ শ্রমিকদের হামলার পর পর সিটি করপোরেশনের কর্মীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে পুলিশের ওপরও হামলা চালায় শ্রমিকরা। এ সময় অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া চৌহাট্টা-আম্বরখানা, চৌহাট্টা-রিকাবীবাজার, চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা-মিরবক্সটুলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।