সিসি ক্যামেরা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে : তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আইনজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞদের মতে ভোটের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে, তা দেখা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন। গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সেই কাজটি করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে।’
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আজ বুধবার মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নানা প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক সমালোচনা দেখছি এবং বেশ কিছু অনলাইন পোর্টালও এটির সমালোচনা করে সংবাদ ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে, আজকেও প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার নিজের বক্তব্য নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণের এবং গণমাধ্যমে সাংবাদিক ও বোদ্ধা ব্যক্তিদের অভিমত হচ্ছে- গোপনকক্ষ গোপনই থাকবে এবং মানুষ গোপনেই ভোট দেবে, এটি তাঁর অধিকার। ক্যামেরা লাগিয়ে কে কোন মার্কায় কাকে ভোট দিচ্ছে, সেটি যদি দেখা হয় তাহলে গোপনকক্ষ তো আর গোপন থাকল না। সাধারণ জনগণ এবং আইনজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর হস্তক্ষেপের অর্থ মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ।’
ড. হাছান বলেন, আপনারা জানেন যে, এর আগের মেয়র নির্বাচনে শামীম ওসমান সাহেব সম্ভবত কাকে ভোট দিয়েছিলেন, সেটি গণমাধ্যমের সামনে দেখিয়েছিলেন। এর ফলে নির্বাচন কমিশন তাকে নোটিশ করেছে যে, আপনি এভাবে কাকে ভোট দিয়েছেন, সেটি গণমাধ্যমে দেখাতে পারেন না, জনসম্মুখে দেখাতে পারেন না। যে নির্বাচন কমিশন আগে নোটিশ দিয়েছিল সেই নির্বাচন কমিশন যদি নিজেই সেটি দেখে এবং অন্যদের দেখায়, তবে সেটি ‘ইনফ্রিঞ্জমেন্ট অভ্ প্রাইভেসি।’
ভোটকেন্দ্রে অবশ্যই সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে, অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ সেখানে ঢুকছে কি না বা সেখানে কোনো গণ্ডগোল বা বিশৃঙ্খলা হচ্ছে কি না, সেটি দেখার জন্য অবশ্যই সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি সেটি সহায়ক মনে করে, থাকতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু গোপনকক্ষে ক্যামেরা লাগিয়ে কে কোন মার্কায় ভোট দিচ্ছে সেটি দেখাকে বিশেষজ্ঞরা মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ বলছেন, সেটিই আমি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম।
নির্বাচনের মাঠের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে আর শতশত মাইল দূর থেকে ক্যামেরায় ছবি দেখে নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের মনে হয়েছে ভোট কেন্দ্রের ভেতরে অন্য লোক-এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, আমি তো আজকে কয়েক দশক ধরে ভোট দিচ্ছি, কিন্তু ইভিএমে ভোট দেইনি। আমারও তো জানতে হবে কীভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হয়। গ্রামে তো মানুষ জিজ্ঞেস করে- ‘ভোট ক্যামনে দিবো।’ তখন প্রার্থীর এজেন্ট, নির্বাচনি কর্মকর্তা যারা থাকেন, তারা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, ভোট দিতে সাহায্য করেন। নির্বাচন কমিশন দূরবীক্ষণের মাধ্যমে দেখেছেন। তারা কে এজেন্ট, কে কর্মকর্তা আর কে বহিরাগত, সেই সব চেহারা কীভাবে শনাক্ত করেছেন তা জানা নেই।’