সি-ট্রাক ঘাট নয়, যেন এক মরণ ফাঁদ

Looks like you've blocked notifications!
ভোলার তজুমদ্দিনের শশীগঞ্জে নদীর মাঝখানে পন্টুন ও জেটি, নেই রাস্তা। ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে যাত্রীরা। ছবি : এনটিভি

সি-ট্রাক ঘাট নয়, যেন এক মরণ ফাঁদ। একপাশে পন্টুন অপর পাশে মেঘনার পানি আর মাঝখানে জেটি। যা কোনো উপকারেই আসছে না সাধারণ মানুষের। তবুও টোল থেকে মুক্তি নেই যাত্রীদের।

বলা হচ্ছে, ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার শশীগঞ্জ স্লুইসগেট সি-ট্রাক ঘাটের কথা। দীর্ঘদিন ধরেই এটি এমন অবহেলিত অবস্থায় আছে। অথচ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই স্থান দিয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরাতে আসা-যাওয়া করে।

সমস্যা হচ্ছে পন্টুন আছে, জেটিও আছে, নেই পন্টুন থেকে জেটিতে যাওয়া এবং জেটি থেকে রাস্তায় আসার কোনো ব্যবস্থা। সরকারি প্রকল্প তাই দায়সারাভাবে এটুকু কাজ করেই শেষ। অথচ ইজারাদার নিয়মিত টোল আদায় করে যাচ্ছেন। টাকা না দিলে হয়রানির যেন শেষ নেই। পন্টুনে যাওয়ার জন্য কোনো রাস্তা বা সিঁড়ি না থাকায় সি-ট্রাক থেকে পন্টুনে নেমে পুনরায় ট্রলারে করে পার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

মনপুরা থেকে আসা যাত্রী মো. সোলাইমান ও হাফিজা বিবি বলেন, ‘আমার শিশু সন্তান নিয়ে কীভাবে রাস্তায় যাব। টাকা যা ছিল, তা সি-ট্রাকের ভাড়া দিয়েছি। ট্রলার ভাড়া দেব কীভাবে।’

পরে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডুবন্ত পথ ধরেই কোনোমতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে গিয়ে উঠে রক্ষা পান। একইভাবে চরম ক্ষোভ মোটরসাইকেল নিয়ে আসা হরি দাসের। তার মতে, পন্টুন আছে, রাস্তা নেই। জেটি আছে, তাতে উঠার ব্যবস্থা নেই। এ কেমন ব্যবস্থা।

পরে স্থানীয় লেবারদের সহযোগিতায় মোটরসাইকেল পার করা হলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। শুধু তিনি নন, একই ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এই প্রতিবেদকসহ বেশ কয়েকজনের। প্রায় কোমর সমান পানি পার হয়ে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল পার করতে হয়েছে।

সি-ট্রাকের যাত্রী ইমতিয়াজুর রহমান ও গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এটা রাস্তা নয় যেন মরণ ফাঁদ। উন্নয়ন এখন পানির নিচে। ঘাটের অনেক কিছুই এখন পানির তোড়ে ভেঙে কোথায় গেছে, তা বলতে পারে না কেউ।’

স্থানীয়রা বলেন, কোনোমতে কাজ করেই চলে গেছে। যা করেছে তা টিকবে না এখানে।

পন্টুন আছে, জেটিও আছে—নেই পন্টুন থেকে জেটিতে যাওয়া এবং জেটি থেকে রাস্তায় আসার ব্যবস্থা। শশীগঞ্জ সি-ট্রাক ঘাট নয়, যেন এক মরণ ফাঁদ। ছবি : এনটিভি

সি-ট্রাক ঘাটের ইজারাদার মো. সবুজ তালুকদার বলেন, ‘আমি এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছি। রাস্তা নেই। নানা ধরনের সমস্যা। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চিঠি দিচ্ছি কোনো লাভ হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ নিয়ে যেন কারো মাথা ব্যথা নেই।’

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন উর রশিদ বলেন, ‘ভোলার মধ্যে হাকিম উদ্দিন ও তজুমদ্দিনের সি-ট্রাক ঘাট দুটি প্রকল্পের আওতায় ছিল। ভোলার দায়িত্বে যে পোর্ট অফিসার রয়েছে তার কথা অনুযায়ী এখানে দেওয়া হয়েছে। আমার কাজ হচ্ছে কাজ শেষে তা বুঝে নেওয়া। শিডিউলে যা ধরা ছিল তাই বুঝে নিয়েছি। এর বাইরে আমার কিছু করার নেই। রাস্তা স্থানীয়ভাবে করে নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে আমি সরেজমিন গিয়ে দেখব কী করা যায়। তবে পন্টুন থেকে যাতে জেটিতে আসা এবং নামা যায় তার ব্যবস্থা আমি করে দেব। রাস্তা স্থানীয়ভাবে করতে হবে।’