সুনামগঞ্জে এবার ভাঙল ছায়ার হাওরের বাঁধ, তলিয়ে যাচ্ছে ফসল

Looks like you've blocked notifications!
সুনামগঞ্জে এবার ভেঙে গেছে শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের বাঁধ। ছবি : সংগৃহীত

সুনামগঞ্জে এবার ভেঙে গেল শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরের বাঁধ। আজ রোববার সকালে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ফসলের খেতে ঢুকতে শুরু করেছে পানি। এতে হুমকিতে পড়েছে শাল্লা ও দিরাই উপজেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। অন্যান্য হাওর ও নদী রয়েছে কানায় কানায় পূর্ণ। ফলে হাওর অঞ্চলের মানুষের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

গত ১ এপ্রিল থেকে আজ পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ৯ উপজেলায় অন্তত ২২টি হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে গেছে। আজকের আগে ২১টি বাঁধ ভেঙে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের দাবি—এলাকার কমপক্ষে ৩০ হাজার হেক্টর বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যদিও প্রশাসন বলছে—ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ থেকে ছয় হাজার হেক্টর। এর মধ্যে আজ সকালে ছায়ার হাওরের বাঁধ ভেঙে গেল। ফলে ধানের ক্ষতি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন কৃষক।

বৃহত্তর ভাটি বাংলার হাওরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ হাওর হলো ছায়ার হাওর। হাওরের মাঝ বরাবর চলে গেছে সুরমার একটি শাখা, মিশেছে কুশিয়ারা হয়ে ভৈরবের কাছে মেঘনায়।

হাওরাঞ্চলের চার জেলার সীমানা এসেছে এ ছায়ার হাওরে। হাওরের পূর্ব পাড়ে নেত্রকোণার খালিয়াজুরি, পশ্চিম পাড়ে সুনামগঞ্জের শাল্লা, উত্তর পাড়ে একই জেলার দিরাই এবং দক্ষিণ দিকে হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ এবং কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা। বিশাল এ হাওরের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে হয় বোরো ধানের আবাদ।

এ হাওরের বাঁধ সুরক্ষায় তাই এত দিন জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কাজ করছিলেন স্থানীয়রা। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আধপাকা ধান ঘরে তুলতে এখন মাঠে ছুটছেন তাঁরা।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ফসল কাটতে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিস কৃষকদের সহায়তা করছে। যে সব হাওরের ফসল ৮০ শতাংশ পেকেছে সে ধান কেটে আনতে কৃষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হাওর থেকে ধান কেটে আনতে সুনামগঞ্জের পাশের জেলা থেকে শ্রমিক আনা হচ্ছে। নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নির্বিঘ্নে যেন শ্রমিক আসতে পারেন, সেজন্য পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সুনামগঞ্জে এ বছর দুই লাখ ২২ হাজার হেক্টর বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।

কৃষি অফিস জানায়, এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার হেক্টর বোরো ফসল কাটা হয়েছে। আগামী দু-একদিন বৃষ্টিপাত না হলে সব ফসল কেটে আনা সম্ভব হবে।