সুনামগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ, ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ এলাকাবাসীর

Looks like you've blocked notifications!
পুলিশি নির্যাতনের ফলে মৃত্যুর অভিযোগে সুনামগঞ্জের চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন এলাকাবাসী। ছবি : এনটিভি

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজারে রাস্তায় নিহত উজির মিয়ার লাশ রেখে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক চার ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিল এলাকাবাসী। আজ সোমবার দুপুর ১টা থেকে পাগলা বাজারে শুরু হয় অবরোধ। পরে বিকেল ৫টায় পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে সড়ক ছেড়ে দেয় এলাকাবাসী।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) একই উপজেলার দরগাপাশা এলাকা থেকে একটি গরু চুরির অভিযোগে শান্তিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ এবং পুলিশ সদস্য আক্তারুজাম্মান পাগলা এলাকার শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়াকে নিজ বাসা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেন। থানায় এনে উজির মিয়াকে মারধর করা হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। পরের দিন ১০ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে নেওয়া হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে গুরুতর আহত উজির মিয়াকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সপ্তাহ পর গতকাল রোববার রাতে মারা যান উজির মিয়া।

মিথ্যা চুরির অভিযোগে উজির মিয়াকে পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ এনে সিলেট সুনামগঞ্জ মহাসড়কের পাগলা বাজারে সোমবার নিহতের স্বজনেরা মানববন্ধন করতে আসেন। স্থানীয়রা বলছেন, সেসময় শান্তিগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িতে করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান ঘটনাস্থলে আসেন, বিক্ষুব্ধ লোকজন তখন গাড়িতে হামলা চালাতে উদ্যত হলে গাড়িচালক দ্রুত চলে যেতে লাশের ওপর গাড়ি তুলে দেন।

নিহত উজির মিয়ার চাচা মখলিছুর রহমান বলেন, ‘উজির মিয়া ভালো মানুষ ছিলেন। পুলিশ মিথ্যা মামলায় থানায় নিয়ে নির্যাতন করলে পরে এই ঘটনায় তিনি মারা গেছেন। পরে আমরা পুলিশি নির্যাতনে উজির মিয়ার মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে চাইলে ইউএনও তার গাড়ি দিয়ে সড়কে রাখা লাশকে চাপা দেয়।’

এই ঘটনায় জড়িত সবার বিচার দাবি করেন মখলিছুর রহমান।

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবু সাঈদ বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত হোক না কেন তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লাশের উপর গাড়ি তোলার বিষয়টি জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা না, একজন দায়িত্বশীল মানুষ এমনটি করতে পারেন না। তারপরও তদন্ত করা হবে।’