সুশাসন নিশ্চিত করলে ভোট চাইতে হবে না : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বক্তব্য দিচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ছবি : এনটিভি

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে জনপ্রতিনিধিদের ভোটের জন্য ভোটারদের কাছে যেতে হবে না।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি) প্রকল্প এবং ইউএনডিপি আয়োজিত স্থানীয় সুশাসন বিষয়ে অংশীজনদের সম্মেলন : অগ্রগতি, শিখন ও করণীয় শীর্ষক দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, সমাজে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের ভোট নয় বরং মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করলে ভোট নিয়ে ভাবতে হবে না। জনপ্রতিনিধিদের মর্যাদার জায়গায় যেতে হবে। না পারলে জোর করে টাইটেল লাগিয়ে শুধু পদবির মর্যাদাই পাবেন। সম্মান আদায় করতে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর মতো আনন্দের কিছু নেই।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা থাকলে ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে আপনাদের (জনপ্রতিনিধি) সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাবে। তারা আপনাদের কার্যক্রমে সুবিধা পেলে একসময় ভোটে তাদের কাছে ক্যাম্পেইন করতে যেতে হবে না। মানুষকে দুঃশাসন ও অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তি দিতে না পারলে আপনাকে বার বার মানুষের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জনপ্রতিনিধিদের জনগণের নিকট থেকে কর আদায়ের পাশাপাশি পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনগণের নিকট প্রকাশ এবং উন্মুক্ত বাজেট উপস্থাপন করতে হবে। এতে করে জনসাধারণ অবশ্যই কর প্রদানে উৎসাহী হবেন। জনগণকে তাদের প্রত্যাশিত সেবা প্রদান করলে কর প্রদান না করার সুযোগ নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের ইনকাম বৃদ্ধি করে উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রাখতে হবে।

উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে ইউনিয়ন এবং উপজেলা পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ইএএলজি প্রকল্প প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে যৌথভাবে কাজ করে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধির জায়গা নিতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন বৈষম্যমুক্ত ও উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টায় নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন ও গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিস নাথালী শুয়ার্ড এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী।

এছাড়া, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মাঠ পর্যায়ে থেকে উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং প্রকল্প কর্মকর্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।