সৃজনশীলতা হচ্ছে একবিংশ শতাব্দীর জ্বালানি: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
মেক্সিকো সিটিতে ইউনেস্কোর আয়োজনে ‘সাংস্কৃতিক নীতিমালা ও স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তৃতা দিচ্ছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ছবি-এনটিভি।

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘সৃজনশীলতা হচ্ছে একবিংশ শতাব্দীর জ্বালানিস্বরূপ। সৃজনশীল শিল্পের ধারণা তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও এ শিল্পের অর্থমূল্য বৈশ্বিক জিডিপির ৩.১%। এতে বিপুল সংখ্যক যুবকের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এ শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে যা বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করে। সৃজনশীল অর্থনীতি সৃজনশীল পণ্য-পরিষেবা, শিল্প-সংস্কৃতি, ধারণা, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ এবং প্রযুক্তির বাণিজ্যকে সহজতর করে।’

প্রতিমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকালে মেক্সিকো সিটির লস পিনোসে ক্যানচা ডি টেনিস কনফারেন্স ভেন্যুতে ইউনেস্কোর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী ‘সাংস্কৃতিক নীতিমালা ও স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্যারালাল সেশন-২ -এ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে ‘সৃজনশীল অর্থনীতির ভবিষ্যত’ শীর্ষক থিমেটিক সেশন-৪ -এ বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন। সেশনটিতে মডারেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ইন্টার আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতি ইউনিটের প্রধান চিলির নাগরিক ত্রিনিদাদ জালডিভার।

ইউনেস্কো কর্তৃক ২০২০ সালে ‘সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ প্রবর্তনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতার নামে নামকরণ করা এ পুরস্কার সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল শিল্পে আগ্রহী তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সৃজনশীলতা টেকসই মানব উন্নয়নের জন্য একটি স্বীকৃত নবায়নযোগ্য সম্পদ। আর তরুণরাই এর প্রধান চালিকাশক্তি ও সৃজনশীল অর্থনীতির ভবিষ্যতের পতাকাবাহক।’

ডিজিটাল মাধ্যমে সংস্কৃতি চর্চায় দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানিয়ে কে এম খালিদ বলেন, ‘এখন ডিজিটাল ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মে সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে। অল্প সময়ে বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে সংস্কৃতি প্রচার ও প্রসারে এটি অন্যতম মাধ্যম। তবে এর একটি খারাপ দিকও রয়েছে যদি না এটিকে নিরাপদ, দায়িত্বশীল ও নিয়ন্ত্রিত উপায়ে প্রচার করা হয়।’ প্রতিমন্ত্রী এসময় বহুজাতিক ও বহুমাত্রিক সংস্কৃতির সুরক্ষা ও প্রসারে সৃজনশীল অর্থনীতির ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল স্পেস, দায়িত্বশীল সাংস্কৃতিক অনুশীলন ও প্রচার এবং সৃজনশীল কনটেন্টের নিয়ন্ত্রিত লেনদেনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন এজেন্ডা থেকে সংস্কৃতিকে বাদ দিলে আমরা এসডিজি'র লক্ষ্য অর্জন করতে পারব না।’ তিনি উপস্থিত সবাইকে সৃজনশীল অর্থনীতির নিরাপদ, দায়িত্বশীল ও নিয়ন্ত্রিত ভবিষ্যতের জন্য একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

সেশনটিতে ইউনেস্কো'র সদস্য ও সহযোগী সদস্য দেশসমূহের মন্ত্রীদের মধ্যে বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি ছাড়াও জিবুতির যুব ও সংস্কৃতি মন্ত্রী মোমিন এসোওয়েহ হিবো, সেইন্ট লুসিয়ার পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি গীবন ফারদিনান্দ, টোঙ্গার কালচার ডিভিশনের পরিচালক পুলুপাকি এ সিলিকুতাপু মোয়ালা ইকা, সেন্ট মার্টিনের শিক্ষা, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী রুডলফ ই স্যামুয়েল সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ভিডিও মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন মাদাগাস্কারের যোগাযোগ ও সংস্কৃতি মন্ত্রী লালাতিয়ানা এন্ডিয়াটোঙ্গারিভো, মন্টিনেগ্রোর সংস্কৃতি ও মিডিয়া মন্ত্রী মাসা ভ্লওভিচ, পালাউ এর মানবসম্পদ, সংস্কৃতি, পর্যটন উন্নয়ন মন্ত্রী নিরাইবেলাস টমাটুলচ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংস্কৃতি ও যুব মন্ত্রী নোরা আল কাবি।