স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা : ২১ বছর পালিয়ে থাকা স্বামী গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে স্ত্রীকে পুড়ায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আলমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ছবি : সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে স্ত্রীকে পুড়ায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আলমকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সাজা থেকে বাঁচতে দীর্ঘ ২১ বছর লুকিয়ে ছিলেন তিনি। গতকাল শনিবার দিনগত রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

মোজাম্মেল হক জানান, ২০০১ সালের জুন মাসে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইরের আটিপাড়া গ্রামের মো. মকবুল হোসেনের মেয়ে আম্বিয়া বেগমকে (১৮) পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন আলম। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য প্রায়ই আম্বিয়া বেগমকে মারধর করতেন তিনি। একপর্যায়ে আলম স্ত্রীর পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ পর্যায়ে আম্বিয়া বেগমের বাবা ১০ হাজার টাক দেন। কিন্তু, যৌতুকের বাকি টাকার জন্য আলম নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে আলম স্ত্রীকে মারধর করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

মোজাম্মেল হক জানান, ২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আলম শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে বাইরে ডেকে নিয়ে মারধর করতে থাকেন।  একপর্যায়ে আম্বিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন আলম স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

পরে আম্বিয়া বেগমকে উদ্ধার করে সিংগাইরের সেবা ক্লিনিকে নিয়ে যান তার স্বজনরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আম্বিয়া বেগম বিস্তারিত ঘটনা জানান স্বজনদের। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর নিহতের বাবা মো. মকবুল হোসেন বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় আলম, আলমের বাবা মো. রহিজ উদ্দিন, মা আলেয়া বেগম, আলমের ভগ্নিপতি রবিউল, আলমের চাচাতো নানা আফতাবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

মোজাম্মেল হক আরও জানান, আলম চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ব্যক্তিগত জীবনে দুটি বিয়ে করেছেন। আম্বিয়া তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্ত্রীকে হত্যার ৫ বছর পর ঢাকার বংশাল এলাকায় নিজের নাম-ঠিকানা গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী সুমীকে (৩৫) নিয়ে ঢাকার টিকাটুলি এলাকায় বসবাস করছিলেন। ২০০১ সালের পর থেকে তিনি কোনোদিন মানিকগঞ্জে যাননি।

গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।