স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান বর্জন মুক্তিযোদ্ধাদের

Looks like you've blocked notifications!
নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অভিযোগ তুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান বর্জন করে চলে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা। ছবি : এনটিভি

নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার অভিযোগ তুলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তারা।

আজ শনিবার সকালে উপজেলার ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দাবি, নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মিথ্যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে।

সূত্র জানায়, অনুষ্ঠানস্থলে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদের জাতীয় পতাকা উত্তোলনে আপত্তি জানান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুন নবী। এ নিয়ে হট্টগোল শুরু হয় সেখানে। একপর্যায়ে অনুষ্ঠান বর্জন করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুন নবী অভিযোগ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। জাতীয় পতাকায় স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তানের হাত লাগুক, আমরা এটা চাই না। স্বাধীনতা দিবসকে আমরা কলঙ্কিত করতে চাই না। তাই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছি।

মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, তোফায়েল আহমেদের বাবা শওকত আলী সরকার একজন রাজাকার।

২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় থেকে প্রকাশিত তালিকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বাবা শওকত আলী ১০২৫, দাদা চাটি মামুদ ১০৬১ এবং নানা ছমির উদ্দিন সরকারের নাম ১০২৪ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা জেলা পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান সাজু বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে উপজেলা চেয়ারম্যানকে দিয়ে পতাকা উত্তোলন না করার দাবি জানান। এ সময় প্রতিবাদ জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ। একপর্যায়ে হট্টগোল শুরু হলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলে যান।

তবে পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুন নবী গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হওয়ার পর থেকে মিথ্যে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে।

ওই নির্বাচনে আমি দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করি এবং তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমার বাবা স্বাধীনতাবিরোধী নন।

এ ব্যাপারে জানতে ইউএনও শাহিনা শবনমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কথা বলতে রাজি হননি। তবে পরে কথা বলবেন বলে জানান।

স্থানীয় সাংবাদিক আবু ফাত্তাহ কামাল পাখি জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান বর্জন করে চলে গেলেও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। এখানে উপস্থিত ছিলেন না উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেও মহান স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কারণে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান বর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।