হাইকোর্টে জামালপুরের এক বিচারকের ক্ষমা প্রার্থনা

Looks like you've blocked notifications!
হাইকোর্ট। ফাইল ছবি

উচ্চ আদালতের জামিনের আদেশ থাকার পরও জাল ডলারের মামলার জাকিরুল নামে এক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জিন্নাৎ জাহান। হাইকোর্ট নিঃশর্ত ক্ষমার বিষয়টি গ্রহণ করে তাঁকে ভবিষ্যতে সতর্ক হয়ে বিচারিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আবুল হাশেম ও আসামি পক্ষে মো. সারওয়ার আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

আইনজীবীরা জানান, জাল ডলারের মামলায় আসামিকে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই জামিনে কারামুক্ত হন আসামি জাকিরুল। পরে হাইকোর্টের দেওয়া ওই জামিনাদেশ বাতিল করেন জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জিন্নাৎ জাহান ঝুনু।

বিষয়টি নজরে এলে তলব করা হয় অধস্তন আদালতের ওই বিচারককে। উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে ওই বিচারক জামিন বাতিলের বিষয়ে কোনো সুদত্তর দিতে পারেননি। পরে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। হাইকোর্ট নিঃশর্ত ক্ষমার বিষয়টি গ্রহণ করে তাঁকে ভবিষ্যতে সতর্ক হয়ে বিচারিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন।

ওই বিচারকের উদ্দেশ্যে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা তো জামিন আদেশটি বাংলা ভাষায় লিখেছি। বিদেশি ভাষা ব্যবহার করিনি। আপনি কি এই আদেশের মমার্থ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন? হাইকোর্ট যখন জামিন মঞ্জুর করেছেন, তখন আপনি কোন এখতিয়ারে সেই জামিন বাতিল করেন?’

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে অবৈধ জাল ডলারসহ মো. জাকিরুলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-এ ধারায় দেওয়ানগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। পরদিন জামিন না-মঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠান ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এরপর জেলা জজ আদালতে জামিন চান আসামি।

গত ৩ মার্চ জামালপুরের সিনিয়র দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খান আসামির জামিন নামঞ্জুর করেন।

এরপর আসামি হাইকোর্টে জামিন চান। গত ১০ এপ্রিল বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আসামির স্থায়ী জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আসামি জাকিরুলকে জামিন দেন আদালত। এই জামিন আদেশ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিলের পর কারাগার থেকে মুক্ত হন আসামি।

পরে মামলাটি বিচারের জন্য জামালপুরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জিন্নাৎ জাহান ঝুনুর আদালতে যায়। সেখানে নতুন করে জামিন চান আসামি। কিন্তু, বিচারক জামিন আবেদন না মঞ্জুরের আদেশ দেন।

স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের জামিন নামঞ্জুরের আদেশের অনুলিপি হাইকোর্টের নজরে আনেন আসামির আইনজীবী মো. সারওয়ার আলম চৌধুরী। হাইকোর্ট গত ৬ জুন ওই বিচারককে তলব করেন।