‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’

Looks like you've blocked notifications!
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাহাদি জে আকিব। ছবি : সংগৃহীত

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ভর্তি হয়েছিলেন কুমিল্লার মেধাবী ছাত্র মাহাদি জে আকিব। সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই অনেকটা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়ছেন তিনি। চমেকের ৬২তম ব্যাচের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকিব বর্তমানে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আকিবের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গত শনিবার সকালে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আকিবের মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। পরে তাঁকে ভর্তি করা হয় চমেক হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে নেওয়া হয় আইসিইউতে।

এরই মধ্যে চিকিৎসাধীন আকিবের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ওই ছবিতে দেখা যায়, আকিবের মাথায় মোড়ানো ব্যান্ডেজে লেখা রয়েছে, ‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’। এর পর থেকেই এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আসছেন অনেকেই।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আকিবের মস্তিষ্কে মারাত্মক জখম হয়েছে। এ ক্ষত সেরে উঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। পরবর্তী সময়ে তাঁর স্বাভাবিক চলাফেরা নিয়েও শঙ্কিত চিকিৎসকেরা।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী—ছাত্রলীগনেতা এনামুল হাসান সীমান্ত এবং রক্তিম দেকে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরোয়ার জাহান জামিন আবেদন নাকচ করে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

এর আগে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন ছাত্রলীগের একটি অংশের নেতা তৌফিকুর রহমান। ঘটনার প্রতিবাদে চমেক ক্যাম্পাসে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগের একটি অংশ।

বলা হচ্ছে, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে গত শুক্রবার রাতে চমেকের ছাত্রাবাসে মারামারির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে পরদিন শনিবার সকালে আরেক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে তিন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন মাহাদি আকিব।

চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আহত তিন ছাত্রের মধ্যে মাহফুজুল হক ও নাইমুল ইসলাম কিছুটা শঙ্কামুক্ত।

এরই মধ্যে চমেক বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এরপর শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে চলে যান। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি কাজ শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে।