হেলপার-সুপারভাইজার সেজে রাতভর ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

Looks like you've blocked notifications!
হেলপার-সুপারভাইজার সেজে রাতভর ডাকাতির পর ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি : ডিবি

হেলপার-সুপারভাইজার সেজে রাজধানীর বুকে রাতভর চলেছে ডাকাতি। শুধু তাই নয়, যাত্রীদের করা হয়ে মারধর। অবশেষে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন এলাকা থেকে আন্তজেলা ডাকাত দলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ।

গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন—ফখরুল কবির শান্ত, মো. মনির হোসেন, মো. ইমরান, মো. মুজাহিদ ওরফে বাবু, মো. রাজিব ওরফে আসিফ ও মো. সানি।

ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি রিসাত পরিবহণের একটি বাস যাত্রীসহ খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে বিকেলে গাজীপুরের শিববাড়ী পৌঁছায়। সেখান থেকে পরবর্তী ট্রিপের জন্য গাজীপুর থেকে নবীনগর যায়। নবীনগর বাস কাউন্টারে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাসটি রাজধানীর দারুস সালাম থানার পর্বত সিনেমা হলের ডানপাশে রাস্তার ওপরে রেখে বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার ভেতর থেকে দরজা লক করে বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত সাড়ে ১২টায় আট থেকে ১০ জনের একটি ডাকাত দল ওই গাড়ির ভেতরে ঢোকে। ওই স্থানে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে ডাকাত দলের নেতা শান্তর নেতৃত্বে তার সহযোগী সুমন ও মনির বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের কাছে মানিব্যাগ, মোবাইল চায়। তারা দিতে না চাইলে রড, হুইলরেঞ্জ ও পাইপ দিয়ে মারধর করে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং চোখ ও হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে পেছনের সিটে ফেলে রাখে।

হারুন অর রশীদ আরও জানান, বাসচালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের কাছ থেকে লুটের পর ডাকাত সর্দার শান্ত গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর পৌঁছায়। এরপর এসে ডাকাত দলের অন্য সদস্য ইমরানকে গাড়ি চালাতে বলে। পরবর্তী সময়ে ডাকাত দলের কয়েকজন নিজেরাই যাত্রী, হেলপার ও সুপারভাইজার সেজে গাবতলী, আসাদগেট, নিউমার্কেট, আজিমপুর, যাত্রাবাড়ী, কাচপুর হয়ে আমিনবাজার, সাভার ও চন্দ্রার বিভিন্ন স্থান থেকে লোক তুলে মারধর করে এবং ওই যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। এভাবে ডাকাতদল সারা রাত ডাকাতি করে ভোর সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার দিকে আহত যাত্রীসহ বাসটি সাভার কবিরপুরে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।

এই ঘটনায় গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মামলার বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীর বক্তব্য পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুক্রবার রাতে ডাকাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ তিনটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নামে দারুস সালাম থানায় ডাকাতির মামলা হয়েছে। তাদের নামে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র-মাদক মামলা রয়েছে।’