১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে ভীতি সঞ্চার করতেই পুলিশের বিশেষ অভিযান : আমান

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর নয়াপল্টনে মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের এক কর্মসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আমানউল্লাহ আমান। ছবি : এনটিভি

জনগণ যাতে ১০ ডিসেম্বরের বিএনপির ঢাকার সমাবেশে না আসে তার জন্য পুলিশ ভীতি সঞ্চার করে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আমানউল্লাহ আমান।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের এক কর্মসভায় এ মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর এই সদস্য। বিএনপি ঢাকা মহানগর কার্যালয়ের ভাসানী মিলনায়তনে এই সভা হয়।

সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. হাসানুজ্জামানের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে বলা হয়, পুরান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম আদালত) এলাকায় পুলিশের হেফাজত থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার প্রেক্ষাপট বিবেচনা, মহান বিজয় দিবস, খ্রিষ্টানদের বড়দিন ও ইংরেজি বর্ষবরণ (থার্টি ফার্স্ট নাইট) উদযাপন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে চলমান অভিযানের পাশাপাশি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ লক্ষ্যে, অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টারসহ অপরাধীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আমাদের শান্তিপুর্ণ সমাবেশ আছে। সে সময় পুলিশ সার্কুলার দিয়েছে, তারা ১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান চালাবে। কোথায়? হোটেল-রেস্তোরায়, কমিউনিটি সেন্টারে, মেসে বাড়িতে। কেন? জনগণ যাতে এসব স্থানে না থাকতে পারে। জনগণ যাতে সভাসমাবেশে না আসতে পারে। ঢাকা বিভাগের লোকজন যেন না আসতে পারে এজন্য এসব অভিযান চালানো হচ্ছে। ঘরে ঘরে ডিস্টার্ব করছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে।’ তিনি এ অভিযান ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ করার আহ্বান জানান।

নয়াপল্টনে অতীতেও সভাসমাবেশ হয়েছে উল্লেখ করে আমান বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর শনিবার। উনারা বলেছেন, যানজট হবে। শনিবার সরকারি ছুটির দিন। অতএব এখানে কোনো যানজট হবে না। আমরা চিঠি দিয়েছি, নয়াপল্টনে সমাবেশ করা জন্য। সেখানে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি। চিঠি দিয়েছি এক জায়গার জন্য, তারা সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে অন্য জায়গায়।’

আমান বলেন, ‘যে জায়গার জন্য চিঠি দিয়েছি সেই পল্টন কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ হবে ইনশাল্লাহ।’ তিনি এ সমাবেশের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন হচ্ছে চাল-ডাল-তেল-লবণের দাম কমানোর জন্য। আমাদের আন্দোলন লোডশেডিং বন্ধ করার জন্য। আমাদের আন্দোলন জনগণ যেন কথা বলার অধিকার পায়, সভাসমাবেশ করতে পারে সেজন্য। আমাদের আন্দোলন জনগণের জন্য আন্দোলন। এ আন্দোলনে আমাদের প্রাণপ্রিয় ভাইদের হত্যা করা হয়েছে। এভাবে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা হত্যার পথ বেছে নিয়েছেন, দমনের পথ বেছে নিয়েছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা মনে করেছেন, হত্যা করলে, জুলুম করলে, নির্যাতন করলে বিএনপির মুখ বন্ধ হয়ে যাবে, জনগণের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি (শেখ হাসিনা) এই পথ বেছে নিয়েছেন কেন? কারণ তিনি জনগনের ভোটে নির্বাচিত নন। উনার দায়বদ্ধতা জনগণের কাছে নেই। বিনাভোটের অবৈধ সরকার আজকে এই পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি মনে করেছেন, ২৩ সালে একটি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবেন। এই জন্যই সভা-সমাবেশ করতে দিতে চান না। জনগণ একজায়গায় হোক তা চান না। তিনি চান না এখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হোক। উনি চান না জনগণ এক জায়গায় দাঁড়াক।’

আমানউল্লাহ আমান আরও বলেন, ‘আজকে ঢাকার মানুষ নেমে এসেছে। বাংলোদেশের মানুষ নেমে এসেছে। প্রমাণ দেখেছেন আপনারা। খুলনা, বরিশাল, রংপুরের সাড়ে তিন ঘণ্টার প্রোগ্রাম সাড়ে তিনদিন হয়েছে। রাজশাহীতে ধর্মঘট ডেকেছে তিনদিন আগে। কেন, জনগণ যাতে না আসতে পারে। জনগণকে এত ভয় পায়।’

অ্যাডভোকেট রুনা লায়লার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বিশেষ বক্তা ছিলেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। বক্তব্য রাখেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও মহিলার দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।