২০০৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী পদ্মা সেতু, দাবি মির্জা ফখরুলের

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত

২০০৪ সালে মার্চের ৩ তারিখ ‘ইন্টারিয়ম রিপোর্ট অন দ্য ফিজিবিলিটি স্টাডি অব পদ্মা ব্রিজ’ এর ওপর ভিত্তি করেই আওয়ামী লীগ সরকার পরবর্তীতে কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বুধবার বিকেলে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ (গতকাল) প্রেস কনফারেন্সে আবারও পূর্বের মতোই তাঁর স্বভাবসুলভ বক্তব্যের মধ্যে বলেছেন—ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মাওয়া প্রান্তে সেতুর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং জাপান সরকারকে পুনরায় মানিকগঞ্জের আরিচা প্রান্তে সেতুর জন্য সমীক্ষা করতে বলেন। আমাদের কাছে প্রমাণ হচ্ছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কপোরেশন এজেন্সির পূর্ণাঙ্গ ফিজিবিলিটি রিপোর্ট যেটা হচ্ছে—মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের।’

ফখরুল বলেন, ‘এই রিপোর্টের কপিও আমাদের কাছে আছে। আপনারা চাইলে দেখতে পারেন। এই রিপোর্টটি ২০০৪ সালে মার্চের ৩ তারিখ সাবমিট করা হয়েছিল। এটা হচ্ছে ইন্টারিয়ম রিপোর্ট অন দ্য ফিজিবিলিটি স্টাডি অব পদ্মা ব্রিজ। একটা ফিজিবিলিটি রিপোর্ট অফিসিয়ালি দেওয়ার পরেও কী করে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলতে পারেন যে, বিএনপি গর্ভমেন্ট আসার পর এটাকে বন্ধ করে দেয় এবং এটা কোনো কাজ করেনি।’

‘এই ফিজিবিলিটি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই তারা (আ.লীগ) পরবর্তীকালে কাজ করেছেন’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘তখনই এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও জাপান যোগাযোগ করে ফান্ডের জন্য আলোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু, সময়ের অভাবে সেটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সমস্যাটা হচ্ছে অন্য জায়গায়। কাজ শুরু করার পরে বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতির কথা বলে ফান্ড বন্ধ করে দিল, তখন থেকেই সমস্যাটা শুরু হয়েছে। সেটার জন্য তিনি বিএনপিকে দায়ী করেন, ড. ইউনূসকে দায়ী করেন।’

‘কোথায় পেলেন তিনি? কীভাবে দেখলেন তিনি যে, আমরা দুর্নীতির কথা বিএনপি বা ড. ইউনূস তুলেছে?’ প্রশ্ন রেখে ফখরুল বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির কথা তোলার পরে দেশবাসী জানল, আমরা জানলাম যে সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে। আজকে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট এখন ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে।’

মির্জা ফখরুল সমীক্ষার বিবরণী তুলে ধরে বলেন, ‘এই সমীক্ষার সামারিতে বলা হয়েছে যে, এই সেতুর দৈর্ঘ্য পাঁচ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার, প্রস্থ ২৫ মিটার, পাইলের সংখ্যা ২৬৮টি, নদী শাসন ১৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার, সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য (উভয় পাশে) ১২ দশমিক ১৬৩ কিলোমিটার, প্রকল্পের (মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে) ইআইআরআর ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ রেলসহ বিসিআর এক দশমিক ৩৮, ভূমির পরিমাণ ৭৯০ দশমিক ৫০ হেক্টর (অধিগ্রহণ-৬১৬ দশমিক ৫ হেক্টর, হুকুম দখল ১৭৪ হেক্টর), ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ৭০ সিআর এক দশমিক ৩৮, ভূমির পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ হাজার। ২০১৫ সালে মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মা সেতু দিয়ে দৈনিক ২১ হাজার ৩০০টি যানবাহন পারাপার করবে এবং ২০২৫ সালে হবে ৪১ হাজার ৬০০টি।’

‘এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০০৮ সালের অক্টোবর নাগাদ শুরু এবং ২০১৩ সালের মার্চ নাগাদ শেষ হবে’, বিবরণীর এমন তথ্য তুলে ধরে ফখরুল আরও বলেন, ‘এটাই পদ্মা সেতুর বেসিক। এটাকেই কেন্দ্র করে তারা (আ.লীগ) পদ্মা সেতুর পরবর্তী কাজ করেছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমীক্ষায় বলা হয়—মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় আট হাজার ৫৮৭ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা। বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ ও জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করার পর ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে এই সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যায়। এই সেতু নির্মাণে সময় লাগবে প্রায় ৫৪ মাস।’