২০-২৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ আড়পাড়ার এক কিলোমিটার সড়ক

Looks like you've blocked notifications!

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের প্রধান সড়কটি ইছামতি বিল অধ্যুষিত তিন-চারটি ইউনিয়নের ২০ থেকে ২৫ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি ইটের সলিং দেওয়া। বর্ষাকাল এলেই সড়কটি এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের এই সড়ক দিয়ে ধান, পাট, গম, সরিষা, সবজিসহ এই অঞ্চলে উৎপাদিত শস্য সরবরাহ করা হয় বিভিন্ন হাটবাজারে। এসব পণ্য সরবরাহে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, ইঞ্জিনচালিত ভ্যান, ভ্যানগাড়ি, শ্যালোইঞ্জিন চালিত ভটভটিও চলাচল করে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সম্পূর্ণরূপে চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় রাস্তাটি দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। 

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আড়পাড়া গ্রামের রাস্তায় গেলে অভিশপ্ত এ রাস্তায় জনদুর্ভোগের কথা জানান স্থানীয়রা। দুর্ভোগ এড়াতে দ্রুত রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান তারা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট বড় বড় গর্তে পানি জমে আছে। দুই কিলোমিটার সড়কের এক কিলোমিটার ঠিক করা হয়েছে কিছুদিন আগে। বাকি এক কিলোমিটারের (পিকুল মোড় থেকে মানিকগঞ্জ বাজার পর্যন্ত) অবস্থা খুব খারাপ। বিশেষ করে পিকুল মোড় নামক স্থানে রাস্তা পুরো ভাঙা। এখানে পানি জমে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে মানিকগঞ্জ বাজার থেকে আড়পাড়ার শেষ পর্যন্ত একটি ইটের সলিং সড়ক নির্মাণ করা হয়। এই রাস্তা দিয়ে গন্ডব, চালিঘাট, বাহিরপাড়া, ধোপাদাহ, কলাগাছি, রায়গ্রাম, মরিশপাশা, শামুখখোলা, শুলটিয়া, নাউরা প্রভৃতি গ্রামের মানুষের নিয়মিত যাতায়াত। 

বিশেষ করে গন্ডব খালে একটি ব্রিজ হওয়ার জন্য এই রাস্তা দিয়ে সোজা এরেন্দা পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। তাই রাস্তাটি মেরামত করা খুব প্রয়োজন।

ইছামতি বিল অধ্যুষিত এ অঞ্চলের মাঠের শস্য ঘরে তুলতে অথবা বিক্রির জন্য বাজারে যেতে যানবাহনের প্রয়োজন হয়। এখান দিয়ে শুকনো মৌসুমে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ মাঝারি ও ছোট যানবাহন চলাচল করে। তবে বর্তমান বৃষ্টির কারণে রাস্তাজুড়ে কাঁদায় পরিণত হওয়ায় কোনো যানবাহন চলতে পারছে না। ফলে ফসল ঘরে তুলতে বা বাজারে নিতে বিপাকে পড়েছে কৃষক।

এ ছাড়া অন্য সময় ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়।

আড়পাড়া গ্রামের আনিচ শেখ নামের এক কৃষক বলেন, ‘ধান বিক্রির ভরা মৌসুমে সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে গেছে। ফলে ট্রলি-ভ্যান চলাচল করতে পারছে না। এতে উৎপাদিত ধান হাটেবাজারে নিতে বিপাকে পড়ছি আমরা।’ 

আড়পাড়া গ্রামের শিক্ষক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘আড়পাড়া গ্রামে দুইটি স্কুল অবস্থিত। আড়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মরিচপাশা উচ্চ বিদ্যালয়। এই দুটি স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়।’ 

নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম কালু বলেন, ‘আড়পাড়া গ্রামের প্রধান সড়কটি তিন-চারটি ইউনিয়নের ২০ থেকে ২৫ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। এই অঞ্চলের সর্ববৃহৎ শিয়েরবর হাটসহ ছোটবড় বিভিন্ন হাটবাজারে যাতায়াতের রাস্তাও এটি। রাস্তাটি ভালো না হওয়ায় বছরের বেশিরভাগ সময় দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয় অত্র অঞ্চলের মানুষকে। এলাকাবাসীর দাবি অবিলম্বে সড়ক মেরামত করার। যাতে করে রাস্তাটি টেকসই হয়। রাস্তাটি এলজিইডির নিয়ন্ত্রণে হওয়ায় স্থানীয়ভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করছি খুব দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা হবে।’

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, অতি দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা হবে। এলাকার মানুষ ভালোভাবে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করবে। রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে কোনো প্রকার কষ্ট পোহাতে যেন না হয়।