৪০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর মিলল ট্রেনের টিকেট

Looks like you've blocked notifications!
কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকেটের জন্য অপেক্ষা। ছবি : সাইফুল সুমন

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে শনিবার বিকেল ৩টা থেকে টিকেটের অপেক্ষা করছিলেন জুয়েল ইসলাম। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর ছোট ভাই রুবেল ইসলাম রোববার ভোরে সেখানে যান। গিয়ে ভাইয়ের স্থানে দাঁড়ান। এরপর পুরো একটি দিন ও রাতের অপেক্ষা।

অবশেষে ৪০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে দ্রুতযান এক্সপ্রেসের তিনটি টিকেট নিতে পেরেছেন দুই ভাই। তাঁরা যাবেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জে। রুবেল বলছিলেন, ‘৪০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর টিকেট মিলল। এ যেন সোনার হরিণ। তবে, আমরা গ্রামে ঈদ করতে পারব, এটিই মহা আনন্দ।’

সোলাইমান হোসেন পরিবার নিয়ে চাঁদপুর থাকেন। গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম। ঈদে স্ত্রী, দুই ছেলে-মেয়েসহ ট্রেনে করে গ্রামে যেতে চান তিনি। কিন্তু, চাঁদপুর থেকে কুড়িগ্রামে সরাসরি ট্রেন যায় না। তাই, ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন সোলাইমান হোসেন। এরপর থেকে তিনি টিকেটের অপেক্ষায় ছিলেন।

অবেশেষে আজ সোমবার ৩৬ ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ২৯ এপ্রিলের মোট পাঁচটি টিকেট পেয়েছেন সোলাইমান। আজ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে যখন সোলাইমানের কথা হয়, তখন তিনি লঞ্চে করে চাঁদপুর যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘অনেক কষ্টের পর টিকেট পেয়েছি। এখন আনন্দ লাগছে। আবার ঢাকায় আসতে হবে, এরপর কুড়িগ্রাম যাব।’

আসাদুজ্জামান আকাশও টিকেট পেতে কমলাপুর গিয়েছিলেন। বিকাশে চাকরি করেন তিনি। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে সেখানে যান তিনি। যাবেন শ্বশুরবাড়ি লালমনিরহাটে। তাঁর নিজের বাড়ি রাজশাহী। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় গত ২১ এপ্রিল তাঁকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়েছেন তিনি। ঈদের দিন বিকেলে আকাশ রাজশাহী যাবেন।

২৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পর অবশেষে আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে টিকেট পেয়েছেন আকাশ। আসাদুজ্জামান আকাশ বলেন, ‘টিকেট নিতে পুরো একদিন দাঁড়িয়ে-বসে থাকতে হয়েছে। তবে, টিকেট পাওয়ার জন্য এখন ভালো লাগছে। আমার পাশে একজন দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাঁকে চলে যেতে বলেছিলাম। তিনি আমার কাছে টাকা দিয়ে চলে যান। আজ তাঁর জন্যেও তিনটি টিকেট কেটেছি।’

শুধু রুবেল, সোলাইমান কিংবা আকাশ নন, এমন শতশত টিকেটপ্রাত্যাশী ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টিকেট পেয়েছেন, ভোগান্তিও পোহাতে হয়েছে তাঁদের। যত ভোগান্তিই হোক, তবুও ঈদের সময় বাড়ি যেতে হবে, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে হবে। গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে আরও অনেক কষ্টই সহ্য করা যায় বলে জানান এমন অনেক অপেক্ষমাণ টিকেটপ্রত্যাশী।