৭০ বছরের ইতিহাস ভেঙে মোংলা বন্দরে রেকর্ড জাহাজ

বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে ৯৭০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের আগমনের মধ্য দিয়ে করোনা মহামারির ২০২০-২০২১ অর্থবছরেই বন্দর সৃষ্টির ৭০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছে। এ অর্থবছরে আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি টাকা, ব্যয় হয়েছে ২১০ কোটি টাকা। নীট মুনাফা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
রোববার সকাল ১০টায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা।
ব্রিফিংয়ে চেয়ারম্যান বলেন, আগামী অর্থবছরে ৩৬০ কোটি টাকা আয়, জাহাজ আগমন এক হাজারেরও বেশি ও নীট মুনাফা ১৫০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এ বন্দরে রিকন্ডিশন গাড়ি এসেছে ১৪ হাজার ৪৪৭টি।
এ প্রেস ব্রিফিংয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন এম আবদুল ওয়াদুদ তরফদার, পরিচালক (প্রশাসন) মো. শাহিনুর আলম, হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন, প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান, পরিকল্পনা প্রধান মো. জহিরুল হক, পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তফা কামাল, প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল ও হাইড্রোলিক) মো. শওকত আলী, উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান মিনা, বন্দর চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব মো. নিয়ামুর রহমানসহ স্থানীয় প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৮ অর্থবছর পর্যন্ত এ বন্দর নানামুখী প্রতিকুলতার কারণে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। বিগত ২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সাতটি জাহাজ ও পূর্ণ অর্থ বছরে মোট ৯৫টি জাহাজ আগমন করেছিল। ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে বন্দর ১১ কোটি টাকা লোকসান করে। ফলে এ বন্দর লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মোংলা বন্দরের উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দেয়। শুরু হয় উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ। তাই ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হয়ে ওঠায় প্রতি বছর বিদেশি জাহাজের আগমনে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
পদ্মা সেতু, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, রেললাইন ও পশুর চ্যানেলের ইনার বারের খননসহ চলমান বন্দরের মেগা প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন হলে এ বন্দরের কর্মচাঞ্চল্যতা আরও অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই আউটার বারের খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে বড় বড় জাহাজ সরাসরি চ্যানেলে অবস্থান ও জেটিতে ভিড়তে পারছে। ফলে এ বন্দর ব্যবহারে দিনকে দিন আগ্রহী হচ্ছেন দেশি-বিদেশি আমদানি-রপ্তানিকারকেরা।
১৯৫০ সালে ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ দ্যা সিটি অব লায়ন্স জাহাজ সর্ব প্রথম সুন্দরবনের পশুর নদের জয়মনিরগোল এলাকায় নোঙর করে। এটাই ছিল মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার সূচনা।