আদালতের সঙ্গে প্রতারণা
পাবনার একটি আদালতে ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের জেল খাটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ধরা পড়ার পর পাবনার আমলি আদালত ৪-এর বিচারক আজ মঙ্গলবার বিকেলে ২০ জনকে জামিনে মুক্তি দেন। তাঁরা বিনা দোষে ১৪ দিন জেল খাটেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহাবুদ্দিন সবুজ এনটিভি অনলাইনকে জানান, পাবনার আমিনপুর থানার বাঘুলপুর গ্রামের মো. জাফর মৃধা ২০১৪ সালের ১৬ জুন রাতে তাঁর দোকানে লুট হয়েছে দাবি করে ঘটনার ছয়দিন পর অর্থাৎ ২২ জুন আদালতে লুটপাট ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করেন।
মামলায় ওই এলাকার জলিল বিশ্বাস (৬৫), কাশেম সরদার (৬৫), রহিম মেম্বার (৫০), বকুল শেখসহ ২৩ জনকে আসামি করা হয়। আদালত আমিনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল গাফফারকে মামলাটির তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য-প্রমাণ না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন।
এদিকে মামলার বাদী মো. জাফর মৃধা পুলিশের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দেন। তখন আদালত স্থানীয় বাঘুলপুর আলহাজ ঈমান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকার হুমায়ুন কবিরকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
তখন বাদী মো. জাফর মৃধা নিজেই ওই প্রধান শিক্ষকের প্যাড ও স্বাক্ষর জাল করে ২৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। চলতি মাসের ১৩ মে ২৩ জন আসামির মধ্যে ২১ জন আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এঁদের মধ্যে একজন আসামি এইচএসসি পরীক্ষার্থী শাহ আলমকে জামিন দিয়ে বিচারক ২০ জনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে বাঘুলপুর আলহাজ ঈমান আলী মৃধা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকার হুমায়ুন কবির আজ মঙ্গলবার বিকেলে পাবনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিপন কুমার মোদকের আদালতে হাজির হয়ে তাঁর স্বাক্ষর ও প্যাড ভুয়া বলে জানান। পরে বিচারক ২০ আসামিকে জামিন দেন।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর থেকেই মামলার বাদী জাফর মৃধা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা