আশকোনায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে দুজন নিহত
রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায় সূর্য ভিলা নামের বাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আজ শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এর আগে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল রাত থেকে এই বাড়িটি ঘিরে রেখেছিল। আজ ভোরবেলা থেকে এই বাড়িতে জঙ্গিদের ধরতে অভিযান শুরু করা হয়।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, অভিযানে সাত জঙ্গির মধ্যে চারজন আত্মসমর্পণ করেছেন, দুজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো বলেন, ‘বাড়িটির ভেতরে অনেক তাজা বোমা, বিস্ফোরক ও গ্রেনেড থাকায় কেউ ভেতরে যাচ্ছে না। তবে কিছুক্ষণ পর আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ভেতরে যাবে। সেখানে কী কী রয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখবে।’
জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের জন্য মাইকিংয়ের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুরু থেকেই জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিহত মেজর জাহিদের স্ত্রী ও মেয়ে এবং জঙ্গি মুসার স্ত্রী ও মেয়ে আত্মসমর্পণ করেছে। এর পর থেকে বাকি তিনজন এই বাড়ির ভেতরে ছিল। দুপুর দেড়টার দিকে জঙ্গি সুমনের স্ত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার ভান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা লক্ষ করেন যে ওই নারীর কোমরে সুইসাইড বেল্ট বাঁধা। এরপর ওই নারী পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে কোমরে বাঁধা সুইসাইড বেল্টের চাবি টান দিলে গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয় এবং ঘটনাস্থলে ওই নারী নিহত হন। আহত হয় তাঁর শিশুসন্তান। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়।
আশকোনার হাজি ক্যাম্পসংলগ্ন আল বাছির জামে মসজিদের পাশের বাড়িটি আজ শনিবার ভোররাত থেকেই ঘিরে রেখেছিল পুলিশ।
শনিবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. ইউসুফ আলী জানান, সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানের পর সাড়ে ৯টার দিকে ওই বাড়ি থেকে চারজন আত্মসমর্পণ করেন। তাঁরা হলেন ঢাকার মিরপুরে নিহত জঙ্গি মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নেসা ও জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা। তাঁদের দুজনের সঙ্গে দুই মেয়েশিশু রয়েছে। উদ্ধারের পর চারজনকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে গেছে পুলিশ।
অভিযানের শুরু থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটি), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের বিশেষায়িত দল সোয়াট ওই বাড়িটি ঘিরে রেখেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই বাড়ির মালিক কাতার প্রবাসী জামিল উদ্দিন। ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জানান, কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি ব্যবসায়ী পরিচয়ে ওই বাড়ির প্রথম তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন।