দুদকের ‘ঘুষ ফাঁদে’ এবার ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা

Looks like you've blocked notifications!
দুদক ঘুষসহ আজ বৃহস্পতিবার শরীয়তপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্ভিসের এক কর্মকর্তা ও তাঁর কার্যালয় সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। ছবি : এনটিভি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘ঘুষ ফাঁদে’ ফেলে এবার শরীয়তপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্ভিসের এক কর্মকর্তা ও তাঁর কার্যালয় সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দুদকের দাবি, এই কর্মকর্তা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ইন্সুরেন্সের টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ দাবি করেছিলেন। সেই ঘুষ দেওয়ার সময় আজ বৃহস্পতিবার হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁদের।

এ ব্যাপারে পালং থানায় মামলা করেছে দুদক। পরে গ্রেপ্তারকৃত শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মজুমদার মো. মাহফুজুর রহমান এবং তাঁর কার্যালয় সহকারী সাজ্জাদুল ইসলামকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ৮ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি ফাস্ট ফুডের দোকান থেকে সড়ক ও জনপথের উপসচিব মিজানুর রহমানকে ৯০ হাজার টাকা ঘুষসহ গ্রেপ্তার করে দুদক। পরের দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। দুদক জানিয়েছিল ‘ঘুষ ফাঁদ’ পেতে এই উপসচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সম্প্রতি দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, দুদকের কাজে গতি আনতে এ ধরনের ‘ঘুষ ফাঁদ’ অব্যাহত থাকবে। এর মধ্যেই আজ শরীয়তপুরে সেই কায়দায় গ্রেপ্তার করল দুদক।

দুদকের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক নাসিম আনোয়ার বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের পক্ষে ইনস্যুরেন্স কোম্পানি থেকে টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিবেদন দাখিলের নাম করে ফায়ার সাভির্সের দুই কর্মকতা ঘুষ দাবি করেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ২৫ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলি।’

মামলার বরাত দিয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, গত ১ ডিসেম্বর গভীর রাতে শরীয়তপুর জেলা শহরের রাজগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তুলি ফার্নিচার, খান এন্টারপ্রাইজ ও আড়িয়ান এন্টারপ্রাইজসহ সাতটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। এতে নগদ টাকা ও মালামালসহ প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে কয়েকটি দোকান ইনস্যরেন্স করা ছিল।

ব্যবসায়ীদের ইনস্যুরেন্সের টাকা পাওয়ার জন্য ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন দিতে তিন লাখ টাকা উপঢৌকন দাবি করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান এবং তাঁর অফিস সহকারী সাজ্জাদুল ইসলাম। ব্যবসায়ীরা নিরুপায় হয়ে ঘুষ দিতে সম্মত হন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে ব্যবসায়ীরা জেলা শহরের রাজগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন সুরুচি হোটেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে যান। তখন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুদকের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক নাসিম আনোয়ার এবং ফরিদপুর অঞ্চলের উপপরিচালক ফজলুল হকের নেতৃত্বে একটি দল দুজনকে ২৫ হাজার টাকা ঘুষসহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

ওসি আরো জানান, এ ব্যাপারে পালং মডেল থানায় মামলাটি করেছেন দুদকের ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন।