রেডিও বাংলা ভাষার কবর রচনা করছে
তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ বলেছেন, এফএম বেতারগুলো আঞ্চলিক ভাষার সুযোগ নিয়ে বিকৃত উচ্চারণে বাংলা ভাষার কবর রচনা করছে। প্রমিত উচ্চারণে বাংলা ভাষা ব্যবহারের গুরুত্বারোপ করে তিনি এফএম বেতারগুলোর প্রতি কড়া নজর দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তদের নির্দেশ দেন।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ‘দাপ্তরিক কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও বানানরীতি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সচিব এসব কথা বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালার প্রধান আলোচক ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মনজুরুর রহমান।
তথ্যসচিব বলেন, দেশের এফএম ব্যান্ড বেতারগুলো আঞ্চলিক বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে এমন এক জগাখিচুড়ি ভাষা সম্প্রচার করছে, যার কিছুই বোঝা যায় না। তিনি এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বেতারের এক কর্মকর্তাকে নজর রাখার নির্দেশ দেন।
বর্তমানে তরুণদের বাংলা বানানে তেমন তোয়াক্কা করতে দেখা যায় না উল্লেখ করে সচিব বলেন, মোবাইলের এসএমএস, ফেসবুকসহ যোগাযোগের নানা মাধ্যমে বাংলাকে ইংরেজি বর্ণে লেখার যে প্রচলন চলছে, তা প্রমিত বাংলা ভাষার জন্য দুর্ভাগ্য।
বাংলাদেশের মানুষকেই বাংলা ভাষা রক্ষা করতে হবে উল্লেখ মরতুজা আহমদ বলেন, এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভয় আছে। কারণ সেখানে এখন এমনভাবে বাংলা ভাষার উচ্চারণ চলছে, যার একসেন্স হয় হিন্দি ভাষার মতো।
একমাত্র বাঙালি জাতি ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে স্মরণ করে সচিব আরো বলেন, আজ এ ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বের ১৮৮টি দেশ এ দিবসটি পালন করে থাকে। যা আমাদের জন্য গৌরবের।
সরকারি কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও এর অধিকার আদায়ের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনেকে অনেক অবদান রয়েছে উল্লেখ করে তথ্যসচিব বলেন, তৎকালীন (৬৪/৬৫ সাল) বিটিভি মহাপরিচালক জামিল চৌধুরীর অবদান স্মরণীয়। তিনিই সম্ভবত প্রথম তৎকালীন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সরকারি কাজে বাংলা ব্যবহার করেছিলেন। তিনি বিটিভির শিল্পীদের সম্মানী প্রদানের চেক ইংরেজির পরিবর্তে বাংলায় লিখেছিলেন। সে সময় বেতারেরও একজন পরিচালক তাঁর দাপ্তরিক কাজে বাংলা ব্যবহারে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন।
সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারে হাইকোর্টের নির্দেশের কথা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে মরতুজা আহমদ আরো বলেন, প্রমিত বাংলা বানানরীতি অনুসরণ করে তাদের দাপ্তরিক কাজে নোট লেখার অনুরোধ জানান। নোট লেখায় বাংলা ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়েরও অনুশাসন রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।