১২ কোটি টাকার দরপত্র ‘জমা দিতে বাধা’

বরিশাল ও ঝালকাঠির ১০টি কলেজের উন্নয়নকাজের প্রায় ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার দরপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার নগরীর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জানান, বরিশালের সদর উপজেলার দুটি এবং গৌরনদী, বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ, মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ, আগৈলঝাড়া ও ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরসহ মোট ১০টি কলেজের সম্প্রসারণ কাজের জন্য গত ১১ জানুয়ারি দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার এ কাজের জন্য ১৭৭টি দরপত্র বিক্রি হয়। এই দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত।
মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়, পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয়ে দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য বক্স রাখা হয়। দরপত্র জমাদানের সময় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু ডিসি ও এসপি অফিসের খবর জানা হয়নি।
কয়েকজন ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কাজের দরপত্র ১০টি গ্রুপকে দিতে তিনদিন ধরে মাঠে আছেন জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা। তাঁরা দরপত্র ক্রেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল থেকে ছাত্রলীগের নেতারা অবস্থান নেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে। সেখানে কোনো ঠিকাদার গেলে তাদের বাধা দিয়ে সমন্বয় করার চেষ্টা করেন ছাত্রলীগের নেতারা। এমন অবস্থায় এক ঠিকাদার দরপত্র জমা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে এক নারীকে দিয়ে দরপত্র পাঠান। পরে ওই নারী গিয়ে দরপত্র জমা দেন। এরপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ সময় সেখানে দরপত্র জমা দিতে গেলে ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়েন যুবলীগকর্মী শফিকুল আলম দোলন। কিন্তু তারপরও তিনি দরপত্র জমা দিতে গেলে জেলা ছাত্রলীগের মাসুদ, শুভ, মেহেদী, বরিশাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ উপস্থিত অনেকের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। এ ঘটনার প্রায় ১৫ মিনিট পর ঘটনাস্থলে র্যাবের একটি গাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
যুবলীগকর্মী শফিকুল আলম দোলন বলেন, ‘ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর বাধার কারণে দরপত্র জমা দিতে পারিনি।’
রফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখে আমি দরপত্র কিনেও জমা দিতে পারিনি।’
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজ্জাক ভূঁইয়া বলেন, ‘ঠিকাদারদের ভেতরের কোন্দলে ওই ঘটনা ঘটতে পারে। জেলা ছাত্রলীগের কেউ সেখানে যায়নি। দরপত্র জমা দিতে কাউকে বাধাও দেওয়া হয়নি।’