বান্দরবানে বাদ পড়লেন ১০ মুক্তিযোদ্ধা, ৭ জন অপেক্ষমাণ
বান্দরবানে যাচাই-বাছাইয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সুবিধা ভোগকারী ১০ মুক্তিযোদ্ধা। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সপক্ষে যথার্থ তথ্য-প্রমাণাদি দেখাতে না পারায় সাবেক উপজেলা কমান্ডারসহ আরো সাতজন মুক্তিযোদ্ধা অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন।
এদিকে, নতুন আবেদনকারীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম মো. মাহাবুবুর রহমানের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিটি। শুক্রবার জেলা প্রশাসন কার্যালয় মিলনায়তনে ছয় সদস্যের যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় এসব বিষয় চূড়ান্ত করা হয়।
প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, শুক্রবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বান্দরবানের মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে কমিটির সদস্য সচিব ও বান্দরবান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরী, ঢাকা মন্ত্রণালয় নিযুক্ত প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ, মৃদুল সরকার, মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সপক্ষে তথ্য প্রমাণাদি এবং সাক্ষী না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা। তাঁরা হলেন আলী আহম্মদ, আলী আকবর, আবদুল জলিল, সুশীল বড়ুয়া, আবুল হোসেন, মো. ইসমাইল, মো. সোলেমান, এস্তাফ মিয়া, মনোরঞ্জন বড়ুয়া ও সাধন বড়ুয়া।
অপরদিকে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সপক্ষে উপস্থাপন করা তথ্য প্রমাণাদিতে গরমিল থাকায় একজন সাবেক উপজেলা কমান্ডারসহ সাতজন মুক্তিযোদ্ধা অপেক্ষমাণ তালিকায় আছেন। তাঁরা হলেন সাবেক সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের কমান্ডার সত্যন্দ্র মজুমদার, মো. শফিকুর রহমান, সেলিম আহমেদ চৌধুরী, কাজল কান্তি বিশ্বাস, সামশুল ইসলাম সিকদার, শুকুমার বড়ুয়া, কল্যাণী রানী ভট্টাচার্য। তবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চার উপজেলা থেকে নতুন ৪৫ জন আবেদনকারীদের মধ্যে মৃত মাহাবুবুর রহমান নামের একজনের আবেদনপত্র গৃহীত হয়েছে।
যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ডার সফিকুর রহমান জানান, কমিটির সভায় তথ্য প্রমাণাদি দেখাতে না পারায় ১০ মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ৭ মুক্তিযোদ্ধার তথ্য-প্রমাণে গড়মিল থাকায় কমিটি দ্বিধাবিভক্ত হিসেবে তাদের অপেক্ষামাণ তালিকা রেখেছেন। আর নতুন আবেদনকারীদের মধ্যে মৃত মাহাবুবুর রহমান নামের একজনের আবেদনপত্র গৃহীত হয়েছে। সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশসহ জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। তবে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় লামা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই হয়নি।
বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ও মুক্তিযোদ্ধা আলী আহমদের সন্তান জাফর আলম বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমাদের নাম রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পরিবার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন। হঠাৎ যাচাই-বাছাই কমিটির এক তরফা সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেব।’