হাসপাতালে ১০ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যু, অবহেলার অভিযোগ
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ নবজাতকসহ ১০টি শিশু মারা গেছে। গতকাল সোমবার রাত ৯টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ১০ ঘণ্টায় এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডে এদের চিকিৎসা চলছিল। এ ছাড়া হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩ রোগীর।
ওসমানী হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুস সালাম এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন ওসমানী হাসপাতালে গড়ে ১০ রোগী মারা যায়। এর মধ্যে এক-দুজন শিশু থাকে।
চিকিৎসকদের অবহেলায় এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মামুন অভিযোগ করেন, তিনি তাঁর দেড় বছরের শিশুসন্তানের জ্বর নিয়ে গতকাল দুপুরে হাসপাতালে আসেন। রাতে জ্বর বেড়ে যাওয়ায় তিনি ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্টার্নি চিকিৎসকের কাছে বারবার ছুটে যান। কিন্তু তিনি চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। আজ সকাল ৭টার দিকে তাঁর সন্তান মারা যায়।
আরেক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত রাতে অসুস্থ বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে এলে গেট খুলতে চাইছিল না সংশ্লিষ্টরা। পরে গেট খুললেও চিকিৎসক ঘুমাচ্ছে বলে জানানো হয়। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি সকালের আগে কোনো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান। এ ছাড়া শিশু ওয়ার্ডের সামনে জড়ো হওয়া অভিভাবকরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করেন।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ জনের মৃত্যু অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। তবু চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইসমাইন হোসেন পাটোয়ারীকে।
মৃত শিশুরা হলো সিলেটের গোয়াইনঘাটের সায়মা (দেড় বছর), জকিগঞ্জের দশগ্রামের আকাশ (সাতদিন), নগরীর শেখঘাটের নিলুমার নবজাতক মেয়ে, শাহ পরাণের আসমা (১), সন্ধ্যা রানীর নবজাতক মেয়ে (পাঁচদিন), সুনামগঞ্জ সদরের তাজরিয়া (সাড়ে তিন বছর), মেহেদী (আড়াই মাস), ছাতকের শাফরাজ (তিন বছর), বিশ্বম্ভরপুরের নাদিনা (ছয় মাস), হবিগঞ্জের ইয়াসমিন (তিনদিন)।
এ ঘটনার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার আব্দুস সবুর শিশু ওয়ার্ডটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিনই পাঁচ-ছয়জন শিশু মারা যায়। আজ কেন ১০ জন শিশু মারা গেল তা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।