রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুর রহমানের বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার সকালে তাঁদের আটকের পর বাঘাইছড়ি থানায় রাখা হয়। 

এ ঘটনায় চবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের এক নম্বর গেট ও শাটল ট্রেন বন্ধ করে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় ওই নেতাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম চৌধুরী।

পুলিশের হাতে আটক ওই নেতারা হলেন চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক বায়েজিদ সজল, সহসম্পাদক দেলোয়ার, সদস্য পিয়াল, রাকিব ও ওসমান।

বাঘাইছড়িতে থাকা চবি ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, উপজেলার সাজেকে ঘুরতে গিয়ে বাঘাইছড়িতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য রকিব হোসাইনের বাড়িতে বেড়াতে যান তাঁরা। সেখানে আজ সকালের নাস্তা শেষে তাঁরা রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় ওসি আবুল কালামের সঙ্গে তাঁদের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ওসি সেখান থেকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর ওসি রকিবের পুরো বাসা ঘেরাও করে তাঁদের পাঁচজনকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় ওসিকে জামায়াতে ইসলামী আখ্যা দিয়ে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ফজলে রাব্বি সুজন বলেন, ওই নেতারা সাজেকে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁদের দ্রুত ছেড়ে দিতে হবে। রোববারের মধ্যে নেতাকর্মীদের ছেড়ে দেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন ও গেট বন্ধ করে অবরোধের বিষয়ে ছাত্রলীগের ওই সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। 

এদিকে ছাত্রলীগের যে কেন্দ্রীয় নেতার বাড়ি থেকে চবি ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকে আটক করা হয়েছে, সেই নেতা রকিব বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের ছেলে।

বাঘাইছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনের আগে থেকেই ওই ওসি যেসব কাজ করেছেন তাতে পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। নির্বাচনের দিনও তিনি বিতর্কিত কাজ করেছেন এবং আজো একইভাবে আবির্ভূত হয়েছেন। অবিলম্বে তাঁকে বাঘাইছড়ি থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। কাপ্তাই ও লংগদু উপজেলায় বিতর্কিত কাজ করে তিনি এখন বাঘাইছড়িতে এসেছেন।

ছাত্রলীগ নেতাদের আটকের বিষয়ে ওসি আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, আটক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবাই বহিরাগত। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান তিনি।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার (এসপি) সাঈদ তারিকুল হাসান বলেন, সেখানে কাউকে আটক করা হয়েছে কি না তা জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি বলেও জানান তিনি।