অভাব ঘোচাতে সৌদি, কয়েক ঘণ্টা পর লাশ
পরিবারের অভাব ঘোচাতে সৌদি আরব গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন বাংলাদেশি শ্রমিক আবুল খায়ের (৩৫)। তিনি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরমোহনার দক্ষিণ রায়পুর গ্রামের হাওলাদারবাড়ির আবদুল কাদিরের ছেলে।
খায়ের বুধবার সকাল ৮টার দিকে সৌদি আরবের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। দেশে করাতকলের (স মিল) কাজ ছেড়ে শ্বশুর ও বাবার অভাবী পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে চার লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে সৌদি আরবে পাড়ি জমান তিনি। কিন্তু সৌদি আরবে পা রাখার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেশটির হাইল প্রদেশে তাবুক রোডের দিলহান এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় খায়েরসহ দুজনের প্রাণ।
নিহত অন্য ব্যক্তি হলেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দুলাল হোসেন (৪০)। দুলালের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে খায়েরের মৃত্যুর সংবাদ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শোক শুরু হয়। এ সময় তাঁর বৃদ্ধ বাবা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন। আশপাশের লোকজন তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে।
জানা গেছে, সৌদি বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেট কারে করে বাসায় যাওয়ার পথে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার দিকে হাইল প্রদেশের তাবুক রোডের দিলহান এলাকায় গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে আবুল খায়ের ও দুলাল হোসেন নিহত হন।
খায়েরের বড় ভাই আবুল কাশেম জানান, দীর্ঘদিন ধরে অর্থ সংকটে ভুগছিলেন খায়ের। স্ত্রী ও মেয়ে রাহাকে (৬) নিয়ে তিনি সব সময় উদ্বিগ্ন থাকতেন। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে তিনি স মিলের কাজ ছেড়ে সৌদি আরবে যান।
খায়েরের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার রুপা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার অবুঝ মেয়ের এখন কী হবে। আমরা কার কাছে গিয়ে দাঁড়াব। আমাদের চারপাশে শুধু অন্ধকার।’ দ্রুত খায়েরের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
নিহত খায়েরের বাড়িতে কথা হয় রায়পুরের চরমোহনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন মোল্লার সঙ্গে। তিনি বলেন, খায়ের পরিশ্রমী ছিলেন। তাঁর পরিবারটি দরিদ্র। নিত্য অভাবের সংসারে ধারদেনা করে তিনি সৌদি আরব যান। তাঁর মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে ও ক্ষতিপূরণ পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।