ভোটযুদ্ধে সবাইকে চান সীমা
‘নৌকা’ প্রতীক পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার বলে মনে করছেন আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সবাইকে নিয়েই নৌকার জয় নিশ্চিত করতে চান তিনি। সীমা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উনার দলের প্রতীক দিয়ে আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন, আমি দলের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নৌকার জয় নিশ্চিত করব ইনশাল্লাহ।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন আঞ্জুম সুলতানা সীমা। আজ বুধবার নগরীর প্রাণকেন্দ্র বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডলের কাছ থেকে নৌকা প্রতীক বুঝে নেন তিনি।
প্রতীক গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সীমা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পরিবেশ ভালো। যেহেতু এখন থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হলো এটা মাঠে গিয়ে দেখা যাবে যে পরিবেশটা এ রকম থাকে কি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘নৌকা প্রতীক পাওয়া অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার।’
কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দ্বিধা-বিভক্তি অনেক পুরনো। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এবার তাই শুরু থেকেই এ ভোট নিয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারাও বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের মতোই সবাইকে একসঙ্গে রেখে ভোটের চিন্তা করছেন তাঁরা।
গত সিটি নির্বাচনে দলের সমর্থন পেয়েছিলেন আফজল খান। সেই নির্বাচনে দলের সমর্থন না পেয়ে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম। তিনি ওই নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। ভোট পেয়েছিলেন প্রায় সাড়ে আট হাজার।
এবারও তানিম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন বলে ঘনিষ্টজনরা প্রচার চালিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর মাঠে নামেননি তিনি। ফলে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে বিদ্রোহীমুক্ত। পাশাপাশি বিএনপিরও কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।
নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। দলের ২৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা ওই কমিটির মাধ্যমে দলের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। ওই কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে। আর সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম থাকছেন সদস্য সচিব হিসেবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ২১ জন নেতাকে নির্বাচনী এলাকার ওয়ার্ডভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।
পেশায় শিক্ষক আঞ্জুম সুলতানা সীমা কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফজল খানের মেয়ে। তবে গত কয়েক বছরে তিনি নিজেই রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করেছেন। তাঁর পরিচালনায় কুমিল্লা মডার্ন স্কুল এসএসসিসহ বিভিন্ন ফলাফলে সারা দেশে খ্যাতি অর্জন করে।
২০০০ সালে কুমিল্লা পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সীমা। এরপর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন চৌধুরী মারা যান। ২০০৩ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত সীমা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ সালে সদর উপজেলা পরিষদে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন সীমা। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে জয়ী হন।
২০০৬ সালে গঠিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন আঞ্জুম সুলতানা সীমা।