মুফতি হান্নানের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি
হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এ কর্মসূচি পালন করে।
সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট সড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এতে প্রায় এক ঘণ্টা ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
সড়ক অবরোধ করে চলা সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আয়নাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমীন লিটু, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফেজা বেগম, ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল, মুন্সী এবাদুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুজ্জামান বাদল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল হাজরা, জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন।
বক্তারা বলেন, হুজি নেতা মুফতি হান্নান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। ফাঁসির পর এ কুলাঙ্গারের লাশ যেকোনো মূল্যে কোটালীপাড়ায় আনতে দেওয়া হবে না। তার ফাঁসি না দেওয়া পর্যন্ত এভাবে প্রতিদিন বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নেতাকর্মীরা।
সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মুফতি হান্নানসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এরপর মৃত্যুর পরোয়ানা তাঁকে পড়ে শোনানো হয়। তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে আনোয়ার চৌধুরী আহত হন। পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ নিহত হন তিনজন।
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া মহিবুল্লাহ মফিজ ও মুফতি মঈন উদ্দিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ আসামিদের আপিল খারিজ করে গ্রেনেড হামলা ও তিনজনকে হত্যার দায়ে মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। পরে বিচারিক আদালত তাঁদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাসহ হরকাতুল জিহাদের ১৩টি নাশকতামূলক ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যার পেছনের মূল হোতা হিসেবে ধরা হয় মুফতি হান্নানকে।
২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। মুফতি হান্নান ওই মামলারও আসামি।