ডেথ রেফারেন্সের শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন আসামি
ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অনুমতির আবেদন) শুনানিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা।
আজ বুধবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ অনুমতি দেন। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিকে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
এর আগে এ মামলার শুনানি শেষে আগামী ২ এপ্রিল রায়ের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ওই সময় আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানার আপিল শুনানিতে অংশ নেননি। পরে আজ আবেদন করলে আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে আবেদন গ্রহণ করে শুনানির সুযোগ দেন।
রানার পক্ষে শুনানি করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবদুন নূর দুলাল। তিনি শুনানিতে বলেন, এই মামলার প্রত্যক্ষদর্শী কোনো সাক্ষী নেই। শুধু কয়েকজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে রানাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের জবানবন্দির ভিত্তিতে একজন আসামিকে সবোর্চ্চ শাস্তি দেওয়া যায় না।
আইনজীবী দুলাল বলেন, এই মামলার এজহারে রানার কোনো নাম ছিল না। তিনি মালয়েশিয়া ছিলেন। এজাহারে যদি নাম থাকত এবং এরপর তিনি দেশের বাইরে যেতেন তাহলে তাকে পলাতক বলা যেত।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক বলেন, আসামির আইনজীবী যেসব যুক্তির অবতারণা করেছেন তা নতুন কিছু নয়। এগুলো এর আগে এই মামলার শুনানিতে উপস্থাপিত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী না থাকলেও ঘটনার পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য ও জবানবন্দির ভিত্তিতেই বিচারিক আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এটা বহাল রাখাই শ্রেয়।
গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট ২২ কার্যদিবস শুনানি গ্রহণ করে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে। এই রায় অপেক্ষমাণ থাকা অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই মামলার পলাতক আসামি রানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর রানার আইনজীবী আবদুন নূর দুলাল ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে সুযোগ দেওয়ার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ (ক) ধারায় আবেদন করেন। বিচারপতি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানির সুযোগ দানের প্রশ্নে রুল জারি করেন। ওই রুলটি হাইকোর্টে এই বেঞ্চে পাঠানো হয়। আজ বুধবার হাইকোর্ট রুলের ডেথ রেফারেন্সে অংশগ্রহণ মঞ্জুর করে রানাকে শুনানির সুযোগ দেন।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে নিজ বাসার সামনে ব্লগার রাজীবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ ওই হত্যার দায়ে মূল পরিকল্পনাকারী রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দ্বীপকে মৃত্যুদণ্ড দেন।