রায় প্রভাবিত, খণ্ডিত : ব্লগার রাজীবের বাবা
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া একজনের যাবজ্জীবনসহ পাঁচজনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখা হয়েছে।
আজ রোববার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অনুমতির আবেদন) ও আপিলের রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর হাইকোর্টের দেওয়া তা প্রত্যাখ্যান করেছেন নিহত রাজীব হায়দারের বাবা মামলার বাদী ডা. নাজিম উদ্দিন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘এটা প্রভাবিত এবং খণ্ডিত রায়। মামলার আটজন আসামির মধ্যে সাতজন ছিল জঙ্গি। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবাই বলেছিলেন, সরকার জঙ্গি এবং সন্ত্রাসের বিষয়ে রাষ্ট্র জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু স্বীকৃত জঙ্গিদের পুলিশ ধরার পরও তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি না দিয়ে, তাদের রেহাই দেওয়া হয়েছে।’
নিহত রাজীব হায়দারের বাবা আরো বলেন, ‘সরকার জঙ্গি নির্মূলে বিভিন্ন জায়গায় যে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, সেই বক্তব্যের সঙ্গে আদালতের রায়ের কোনো মিল নেই। জঙ্গি নির্মূলে সরকার বদ্ধপরিকর থাকার যে ওয়াদা করেছে, আদালতে তার মিল পাইনি। এ রায়ে আমি ক্ষুব্ধ, রায়ের বিরুদ্ধে আমি আপিল করব।’
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে রাজধানীর পল্লবীতে তাঁর বাসার সামনে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা মামলায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ে মাকসুর হাসান অনিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমুদ্দীন রাহমানীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এ রায়ের পর মামলার নথি গত ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে আসে। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।