রাতে হঠাৎ তিস্তার পানি বাড়িঘরে

Looks like you've blocked notifications!
ফাইল ছবি

কোনো প্রকার বৃষ্টি-বাদল ছাড়াই উজানের ঢলে ফের ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা। আজ শুক্রবার সকাল থেকে নীলফামারীতে তিস্তা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। হঠাৎ করেই পানি আসায় প্রথম রোজায় অনেকের সেহরি খেতে সমস্যা হয়। পানির কারণে অনেকে সেহরি খেতে পারেননি বলেও অভিযোগ করেন।

ডালিয়া ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল ৬টা থেকে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তায় ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পানি আসায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তার ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।

এদিকে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, ডালিয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হলেও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার আবার রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তিস্তাপারের গ্রাম ও জনপদে। পানি বাড়ার কারণে ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী, পশ্চিম বাইশপুকুর, পূর্ব বাইশপুকুর ছোটখাতা, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের কিসামত ছাতনাই চর, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, ঝুনাগাছ চাপানী ও জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের ১৫-২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি বেড়ে তিস্তা পাড়ের দুই কূল ছাপিয়ে যায়।

ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন সাংবাদিকদের জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তিস্তায় উজানের ঢল নামতে থাকে। ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ী, উত্তর খড়িবাড়ী, দক্ষিণ খড়িবাড়ী, পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রাম প্লাবিত হয়ে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বাড়িতে পানি ঢুকে যায়।

ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, প্রথম রমজানের রাতের সেহরি খেতে পারেনি বন্যাকবলিত মানুষ। যে সময় মানুষ সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সে সময় বানের পানি এসে ঘরবাড়ি তলিয়ে দেয়।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল লতিফ খান বলেন, তিস্তাবেষ্টিত বিস্তীর্ণ এলাকা হঠাৎ করে উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়িতে হাঁটুসমান পানি উঠেছে।

এক সপ্তাহ আগে একদিনের জন্য তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। এরপর পানি নেমে যায়। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটার কয়েক দিনের মাথায় আবারও প্লাবিত হলো তিস্তা অববাহিকার অনেক জনপদ।

তিস্তা অববাহিকায় বৃষ্টি না হলেও ভারত গজলডোবা ব্যারাজের গেট খুলে দেওয়ায় অসময়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পানিবন্দি অনেক মানুষ।