রাজশাহীতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান, টাকাসহ আটক ১
রাজশাহী মহানগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় ওই ব্যক্তির ফ্ল্যাট থেকে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাত ১১টা থেকে পৌনে ২টা পর্যন্ত পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ১১টার দিকে আট তলাবিশিষ্ট ওই ভবনটি ঘিরে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে পুলিশ, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় ভবনের সামনের সড়কে একটি অ্যাম্বুলেন্সও এনে রাখা হয়। তবে সেখানে কোনো গোলাগুলি বা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করার পর সব ফ্ল্যাটের বাতি নিভিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভবনটির সপ্তম তলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়।
সেখান থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রাখার পর সেখানে গণমাধ্যমকর্মী এবং বিপুল সংখ্যক উৎসুক মানুষ ভিড় করে। ওই ভবনটির পাশের আরেকটি ভবনেই থাকেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। তিনিও ভবনটির সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন।
এরপর রাত পৌনে ২টার দিকে আটক ব্যক্তিকে ভবনের ফটক দিয়ে বের করে আনে পুলিশ। কিন্তু বিপুল উৎসুক মানুষ ও গণমাধ্যমকর্মী দেখে পুলিশ তাঁকে আবার ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর ফটকের সামনে একটি মাইক্রোবাস দাঁড় করিয়ে রেখে আটক ব্যক্তিকে ভবনের গ্যারেজ দিয়ে কালো রঙের একটি প্রাইভেট কারে করে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রাইভেটকারটি আটক ব্যক্তির বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আটক ব্যক্তিকে ভবনের সামনে আনার সময় দেখা যায়, ওই ব্যক্তি সাদা রঙের একটি পাঞ্জাবি পরে আছেন। তাঁর মুখে ছোট ছোট দাঁড়ি ছিল। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।
পুলিশের উপকমিশনার বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ওই বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়। এরপর জঙ্গি সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই ব্যক্তির ফ্ল্যাট থেকে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে। তবে জঙ্গিদের আস্তানায় যে ধরনের আলামত পাওয়া যায়, তা সেখানে পাওয়া যায়নি।
বাড়িওয়ালা অহিদুল ইসলাম বাচ্চুর বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় চার মাস আগে আবির মাহমুদ (৪০) পরিচয় দিয়ে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তিনি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন বলে দাবি করেছেন। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় তিনি ভাড়াটিয়ার তথ্য ফরম পূরণ করেননি। ফ্ল্যাটে তিনি তাঁর স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। তাঁর স্ত্রীর নাম তানজিলা বেগম বলে জানিয়েছেন ভবনের মালিক।
নাহিদুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তির স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িওয়ালার জিম্মায় রাখা হয়েছে। আটক ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় ও ঠিকানা পরে জানানো হবে।