জেএমবির ১০ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পেছাল
পুরান ঢাকার হোসেনী দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলার মামলায় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১০ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য ২৪ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজের আদালতে অভিযোগ গঠনের এই দিন ধার্য করেন।
আজ এ মামলায় অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে না পারায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল সময়ের আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক নতুন করে দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন।
গত বছর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক শফিউদ্দিন শেখ ১০ জেএমবির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযোগপত্রে কবির হোসেন, মাসুদ রানা, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাসুদ, আবু সাঈদ সোলেমান, শাহ জালাল, ওমর ফারুক, চান মিয়া, রুবেল, আরমান ও জাহিদ হাসানকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হোসেনী দালানে বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে জেএমবির ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি। এর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান তিনজন। তাঁরা হলেন শাহাদাত ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা, আবদুল্লাহ বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান, সাঈদ ওরফে হিরন ওরফে কামাল।
এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জাহিদ হাসান, আরমান, রুবেল ইসলাম ও কবির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর মহররমের রাতে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলায় কেঁপে ওঠে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় তীর্থস্থান হোসেনী দালান ইমামবাড়া। এই ঘটনায় দুজন নিহত হন। আহত হন শতাধিক মানুষ। তাঁদের মধ্যে ৫৭ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১৭ জন মিটফোর্ড হাসপাতালে এবং ১৬ জন মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা যায়, ওই দিন রাত দেড়টা থেকে হোসেনী দালানের মূল ফটকে একটি তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। মিছিলটি পল্টনে যাওয়ার কথা ছিল। মিছিলে যোগ দিতে এসেছিলেন তরুণ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। এর মধ্যেই রাত পৌনে ২টার দিকে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। কারো কারো মতে, পরপর ১০ থেকে ১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কেউ বা দৌড় দিতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পায়ের তলায় পড়েছেন। কান্না-চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
আশপাশের বাসিন্দারা যে যেভাবে পেয়েছেন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান, লেগুনায় আহতদের ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জালাল উদ্দিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।