রানা প্লাজার ঘটনাকে মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে : সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। রানা প্লাজা ধসের চার বছর অতিক্রান্ত হলেও আজ পর্যন্ত সোহেল রানাসহ দোষী সরকারি কর্মকর্তা ও গার্মেন্টসের মালিকদের শাস্তি নিশ্চিত হয় নাই। রানা প্লাজার এই জায়গা দখলের চেষ্টা হচ্ছে নতুন করে।’
আজ সোমবার সাভারে রানা প্লাজার অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভের সামনে আয়োজিত পথসভায় এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। এর আগে রানা প্লাজার অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি। ওই সংগঠনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
পথসভার আগে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবুর নেতৃত্বে কাফন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে অংশগ্রহণ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। এ ছাড়া এ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিক পরিবারের সদস্য এবং আহত শ্রমিকসহ সংগঠনের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রবল ঝড় ও বৃষ্টির মধ্যেই একটি পথসভা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে পুলিশ বাধা দেয়, মাইক বন্ধ করে দেয় ও ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
সভায় জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আপনজনদের স্মরণ করার দিনে পুলিশের এই মারমুখী ভূমিকা ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয় এবং সরকারের ফ্যাসিবাদী চেহারার প্রকট বহিঃপ্রকাশ। এই অগণতান্ত্রিক সরকার যে যে কোনো ধরনের জনসমাবেশকেই ভয় পায়, তারই প্রমাণ পাওয়া গেল এই শ্রদ্ধা নিবেদনের স্থলে বাধা প্রদানের ভেতর দিয়ে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যে শ্রমিকের শ্রমে ঘামে চলে উৎপাদনের চাকা, প্রবৃদ্ধি ঘটে অর্থনীতির, সেই শ্রমিকের অবদানকে অস্বীকার করার আয়োজন চলছে।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই খালি জায়গার সামনে দোকানপাট বসিয়ে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে যাতে খালি জায়গা কারো নজরে না আসে, সবাই ভুলে যায় এখানে কী নির্মমতা ঘটেছিল।’ তিনি ওই স্থানে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান।
সভায় অন্য বক্তারা বলেন, দোষীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং ৪৮ মাস ধরে প্রতি মাসের ২৪ তারিখে বিভিন্ন দাবিতে ধারাবাহিকভাবে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি তার সংগ্রাম জারি রেখেছে। সমাবেশে বক্তারা ২৪ এপ্রিলকে শোক ও শ্রমিক নিরাপত্তা দিবস ঘোষণা দিয়ে সব কারখানায় ছুটি এবং অবিলম্বে রানা প্লাজাকে দখলমুক্ত করে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি করেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শামা, নিহত শ্রমিক রিয়াজুল খোকনের মা রাবেয়া খাতুন, ফলজে রাব্বির মা রাহেলা বেগম, নিহত সাগরিকার বোন বকুল খাতুনসহ স্থানীয় নেতারা। সমাবেশের শুরুতে রানা প্লাজার শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।