শিক্ষায় সব শিশুর প্রবেশাধিকার চায় সরকার : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে প্রতিটি শিশুরই শিক্ষায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করাটা জরুরি। আধুনিক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া কোনো দেশই এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে পারবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর কার্যালয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি সংযুক্ত করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষক দ্বারা পরীক্ষা করানো হচ্ছে।
পরীক্ষার উত্তরপত্র যাচাইয়ের এই নতুন সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত সময়োচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে পাসের হার কিছুটা কমে গেলেও পরীক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ে এটি যথার্থ কার্যকরী হবে।
কৃতকার্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। কাজেই তারা তাদের পড়াশোনায় একটু মানোযোগী হলেই আর ফেল করবে না।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় এ বছর এসএসসি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের মাধ্যমে পরীক্ষা শেষের ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশে সমর্থ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা এবং শিক্ষাবোর্ডগুলোকেও ধন্যবাদ জানান।
শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বছরের প্রথম দিনই সরকারের উদ্যোগে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত নানা বৃত্তি প্রদানের ফলে অভিভাবকদের এ ক্ষেত্রের বোঝাটা অনেকাংশেই লাঘব হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, তাঁর সরকার হাওর, দুর্গম চর এলাকা, পার্বত্য অঞ্চল এবং দ্বীপাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আবাসিক স্কুল করে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
আটটি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন এ বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (এসএসসি) এবং সমমানের মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষার আজকের প্রকাশিত ফলে সার্বিক পাশের হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এ বছর ১৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৬২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষার্থীয় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ চার হাজার ৭৬১ জন শিক্ষার্থী।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অনুষ্ঠানে সব শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই ফলাফল হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারে নানারকম উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি-উপবৃত্তিসহ বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদানের জন্য সরকার ট্রাস্ট ফান্ডও গঠন করেছে।
এ সময় শেখ হাসিনা বিদ্যালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কেও তুলে ধরেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতক্ষীরা এবং শেরপুর জেলার ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।