এবার ইকুয়েডরে গেল বাংলার জাহাজ
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরে প্রথমবারের মতো জাহাজ রপ্তানি করল বাংলাদেশ। বাংলাদেশে তৈরি ‘এমভি স্টেলা আটলান্টিক’ নামে ওই জাহাজ ইকুয়েডর থেকে দক্ষিণ আমেরিকার গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে পণ্য পরিবহন করবে।
দেশের চট্টগ্রামভিত্তিক জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড নির্মাণ করেছে ‘এমভি স্টেলা আটলান্টিক’। ইকুয়েডরের রাষ্ট্রীয় জাহাজ প্রতিষ্ঠান ইকুয়াডোরিয়ান শিপিং ট্রান্সপোর্ট, ট্রান্সনেইভ গ্রহণ করেছে জাহাজটি। ওয়েস্ট মেরিন শিপইয়ার্ড থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
‘এমভি স্টেলা আটলান্টিক’ ৮৮ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ একটি টুইন ডেকার জাহাজ। নৌযানটি জার্মান ‘ক্লাস ডিএনভি-জিএল’-এর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এবং পানামা পতাকাবাহী। জাহাজটিতে দুটি এবং প্রতিটিতে ৬০ টন পণ্য উত্তোলন ক্ষমতাসম্পন্ন ভারী ক্রেন রয়েছে।
জাহাজটি হস্তান্তর উপলক্ষে আজ সোমবার বন্দরনগরীতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম নিজামউদ্দীন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইকুয়েডোরিয়ান নেভি কোম্পানির পরিচালক ক্যাপ্টেন এলিজান্ড্রো ভিলাসিস আগুইলার এবং ট্রান্সনেইডের ব্যবস্থাপক লুইস মিরা ব্রিটো।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রিয়ার অ্যাডমিরাল এম নিজামউদ্দীন আহমেদ এ জাতীয় জাহাজ নির্মাণ ও রপ্তানির মাধ্যমে ‘ওয়েস্টার্ন মেরিনে’র অর্জন ও সাফল্য এবং জাতীয় অগ্রগতিতে প্রতিষ্ঠানটির বলিষ্ঠ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন মেরিন সারা বিশ্বে উচ্চ মানসম্পন্ন জাহাজ নির্মাণকর্মের জন্য বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু বলেন, ‘এই জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে ইকুয়েডরের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হবে। কেননা, এই প্রথমবারের মতো বিশ্বের এ অঞ্চলে আমরা আমাদের সমৃদ্ধ ও উন্নত কারিগরি নৈপুণ্য প্রদর্শনে সমর্থ হয়েছি।’
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান সায়ফুল ইসলাম বলেন, ‘ওয়েস্টার্ন মেরিন বিশ্বের বিভিন্ন অংশে জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে জাতীয় রপ্তানিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। সমগ্র বিশ্বে জাহাজ এখন উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য হিসেবে বিবেচিত এবং পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সফল জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে জাহাজ নির্মাতা জাতি হিসেবে আমাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে পেরেছে।’ তিনি রপ্তানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প আরো উন্নত, সমৃদ্ধ ও সম্প্রসারিত করার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে আমরা প্রথমে ইউরোপে, অতঃপর পূর্ব আফ্রিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এবং বর্তমানে আমরা দক্ষিণ আমেরিকায় সম্প্রসারিত হয়েছি। এখন থেকে এই জাহাজ মেইড ইন বাংলাদেশ প্রতীক ধারণ করে সারা বিশ্বে আমাদের উন্নতি ও সমৃদ্ধির বার্তা বহন করবে।’