বাবা-মাকে হত্যা মামলায় ঐশীর আপিলের রায় আজ

Looks like you've blocked notifications!

পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাঁদের মেয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আজ।

সুপ্রিম কোর্টের সম্পূরক কার্যতালিকায় আজ সোমবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করা হয়। এর আগে গত ৭ মে শুনানি শেষে এ বিষয়ে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

আদালতে ঐশীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির গতকাল রোববার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত ১২ মার্চ ঐশীর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। আজ (গতকাল) শুনানি শেষ হয়েছে। যেকোনো দিন তাঁর রায় ঘোষণা করা হবে।’

এর আগে ঐশী রহমানকে ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর দুবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে।

একই সঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে ঐশী রহমান রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

চলতি বছরের ১০ এপ্রিল পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানের মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে হাইকোর্টে হাজির করা হয়। ওই দিন আদালতে হাজির করার পর খাস কামরায় নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ওই দিন আদালত বলেন, একটি মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়—মেডিকেল রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐশী রহমান হত্যার সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন এবং বংশগতভাবে তাঁরা মানসিক রোগী। তাঁর দাদি, চাচারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। সেই মেডিকেল রিপোর্টের সত্যতা যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করতে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাঁকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরের দিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার দিন বিকেলে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমান।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ৪৯ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।